অবরোধের দ্বিতীয় দিনের চিত্র
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে স্বল্প আকারে দূর পাল্লার যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে যাত্রী সংখ্যা খুবই কম।
রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে বিবিসির সংবাদদাতা শাহনেওয়াজ রকি জানান, ওই বাস টার্মিনালটি থেকে কিছু বাস ঢাকার বাইরের জেলাগুলোর উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।
এসব পরিবহন দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে যানবাহন চলাচল করে থাকে। এসব জেলার দিকে চলা উদ্দেশে কয়েকটি বাস ছেড়ে যেতে দেখেছেন তিনি। তবে এসব বাসে যাত্রী সংখ্যা ছিল হাতেগোনা।
বাসের কর্মচারীরা বলছেন, সকালে যেসব বাস ছেড়ে গেছে সেই বাসগুলোতে সাত-আটজনের বেশি যাত্রী নেই। এরপরও বাস চলাচল শুরু করেছেন তারা।
তবে আন্তঃজেলা বাস চলাচল শুরু হলেও খুব বেশি সংখ্যক বাস ছেড়ে যায়নি।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে জানানো হয়, স্বাভাবিক সময়ে এই টার্মিনালটি থেকে বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন কমপক্ষে দুই হাজার বাস ছেড়ে যায়।
কিন্তু অবরোধের সময় গত ২৪ ঘণ্টায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে আড়াইশোর মতো বাস ছেড়ে গেছে।
টার্মিনালে বাস অপারেটররা বলছেন, যাত্রী না থাকলেও বাস চলাচলে বাধ্য হচ্ছেন তারা। কারণ পরিবহন চালক সমিতি তাদের বাস চলাচল করাতে বাধ্য করছে।
এছাড়া বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে শ্রমিক নেতারাও চাপ দিচ্ছেন এবং একই সাথে সরকারি নির্দেশনাও রয়েছে।
সকালে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ঢাকার বাইরে থেকে কয়েকটি বাস এসে পৌঁছেছে।
এসব বাসের চালকরা জানাচ্ছেন, রাতের বেলা পুলিশি পাহারায় মহাসড়কগুলো পার করেছে তারা। বাসগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই রাতের বেলা চলাচল করছে।
এদিকে রাজধানী ঢাকায় যান চলাচল গতকালের তুলনায় আজ বেড়েছে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিবিসির সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, যেসব এলাকায় অফিস-আদালত বেশি সেসব এলাকায় গণপরিবহন অন্যান্য এলাকার তুলনায় বেশি চলাচল করছে।
রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরী পাড়া, প্রগতি সরণী, রামপুরা, মোহাম্মদপুর, বসুন্ধরা এলাকা ঘুরে দেখা যান চলাচল বেশ বেড়েছে। অফিসগামী এবং স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের চলাচলও তুলনামূলক বেশি ছিল। শ্যামলী, আঁগারগাও এবং মহাখালীর ওয়্যারলেস গেট এলাকায় হালকা যানজটও চোখে পড়েছে।
কমলাপুর ট্রেন স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অবরোধের মধ্যেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোররাত ৪টা ৪৫ মিনিটে হাজারীবাগের বেরিবাঁধ এলাকায় ভিআইপি পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। এছাড়া সকাল পৌনে ৬টার দিকে মিরপুর-১৩ নম্বর এলাকায় প্রজাপতি পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়।
বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট ১৩টি যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সাতটি বাস, চারটি কাভার্ড ভ্যান এবং দু’টি ট্রাক রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, রাজধানী ঢাকায় মোট পাঁচটি যানবাহন এবং গাজীপুরে তিনটি যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ঢাকার বাইরে খাগড়াছড়িতে একটি, বগুড়ায় একটি, বরগুনায় দু’টি, নোয়াখালীতে একটি যানবাহনে আগুন দেয়ার খবর দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ভোররাত পৌনে ২টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয়া হয়।
রাত ২টায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমিনবাজার এলাকায় একটি ট্রাকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
সূত্র : বিবিসি