1. nobinbogra@gmail.com : Md. Nobirul Islam (Nobin) : Md. Nobirul Islam (Nobin)
  2. bd.momin95@gmail.com : sojibmomin :
  3. bd.momin00@gmail.com : Abdullah Momin : Abdullah Momin
  4. bd.momin@gmail.com : Uttarkon2 : Uttar kon
জন্মদিনেই মারা গেল গৃহবধূ জ্যোতি ৪ জনের নামে মামলা, স্বামী গ্রেফতার - Uttarkon
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৩:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া উপজেলা নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখাই আমার লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী মেহনতি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নই আ’লীগের মূল লক্ষ্য : কাদের বিএনপি নেতারা হতাশ নয় : কাদেরকে রিজভী এলপিজির দাম আবারো কমলো মাছের বরফে তৈরি শরবতে প্রাণ জুড়াচ্ছেন নগরবাসী রাজশাহীর তানোরে হিমাগারে রাখা ভারতীয় আলুতে পচন ও গাছ স্থানীয় চাষিরা দিশেহারা আগামী আমন মৌসুম থেকে পালিশ (ছাটাই) বিহীন চাল বাজারজাত করতে মিলারদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে : খাদ্যমন্ত্রী তাপদাহে ক্লান্ত শ্রমজীবি ও পথচারীদের মাঝে সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র শরবত বিতরণ বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা ব্যারিস্টার এ জে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুতে সাবেক এমপি লালুর শোক

জন্মদিনেই মারা গেল গৃহবধূ জ্যোতি ৪ জনের নামে মামলা, স্বামী গ্রেফতার

  • সম্পাদনার সময় : সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৯৩ বার প্রদশিত হয়েছে

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের আলোচিত প্রখ্যাত মারোয়াড়ী পরিবারের গৃহবধূ জ্যোতি আগারওয়ালার আত্মহত্যার চেষ্টা ও চারদিন পর মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী সুমিত কুমার আগারওয়ালকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।জ্যোতির লিখে যাওয়া সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ৪ জনকে আসামী করে সৈয়দপুর থানায় মামলার প্রেক্ষিতে রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রংপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলায় অন্যান্য আসামীরা হলেন সুইসাইড নোটে উল্লেখ করা জ্যোতির শ্বাশুড়ী উমা দেবী (৪০), দেবর অমিত কুমার আগারওয়াল ও অমিত কুমারের স্ত্রী ডাঃ অমৃতা কুমার আগারওয়াল (৩৫)। রবিবার সকাল ৭ টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় গৃহবধূ জ্যোতি। ওইদিন রাত ১২ টার পর (১৯ সেপ্টেম্বর) তার বড় ভাই নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিমল কুমার জাজোদিয়া আগারওয়াল বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। জ্যোতি আগারওয়ালের মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে আনা ফ্রিজিংভ্যানে রাখা হয়েছে। ভারতের দার্জিলিং থেকে তার বড় ভাই রঞ্জিত কুমার জাজোদিয়াসহ আত্মীয় স্বজন আসার পর মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় শ্মশানে তার মরদেহের সৎকার করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

আত্মহত্যার আগে সুইসাইড নোটে জ্যোতি আগারওয়াল ওরফে ববি লিখেছেন,
মানুষ মৃত্যুর সময় কখনো মিথ্যে বলেনা। আমার বিয়ে হয়েছে ২০০১ সালের ১২ ডিসেম্বর। আমার মা বাবা নেই। বিয়ের পর থেকেই শ্বাশুড়ী ও স্বামী-দেবর মানসিক নির্যাতন করছে। দেবরের বিয়ের পর তাঁর স্ত্রী ডাঃ অমৃতা আগরওয়ালাও তাদের সাথে যোগ দিয়ে মানসিক নির্যাতন চালায়।

ওঁরা আমাকে ৪ বার মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। বেঁচে আছি সেটা আমার ভাগ্য। কিন্তু তাঁদের অত্যাচারে আমার আর বেঁচে থাকা হলোনা। আজীবন আমাকে কাঁদতে হয়েছে। আমার মৃত্যুর বিচার চাই। সন্তান দুটিকে রক্ষার আকুতিও জানিয়েছেন জ্যোতি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জ্যোতি আগারওয়াল জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পুরাতন বাজার এলাকার মৃত পুরনমল জাজোদিয়া আগারওয়ালার মেয়ে। ২১ বছর আগে সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়া শহীদ ডাঃ বদরুজ্জামান রোডের বাসিন্দা সুশিল কুমার আগারওয়ালার ছেলে ব্যবসায়ী সুমিত কুমার আগারওয়ালার সাথে তাঁর বিয়ে হয়।

বিয়ের পর থেকেই শশুরবাড়ির লোকজন বিশেষ করে উল্লেখিত ৪ জন নির্যাতন চালিয়ে আসছে। শ্বাশুড়ী উমা দেবী তাঁকে কখনো দেখতে পারেনি, ভালও বাসেনি। জ্যোতির সংসার ভাঙার পেছনেও তাঁর হাত রয়েছে। তিনি উল্টাপাল্টা বলে তাঁর ছেলে সুমিতের কান ভরতো। এমনকি বাচ্চা দুটোকেও ভয় দেখিয়ে আলাদা করে রাখেন। কাজের লোক ও পাড়া প্রতিবেশীরাও সব জানে।

নিক্কির ছোট ভাই অমিত কুমার আগারওয়ালার সাথে সৈয়দপুরের স্থানীয় ডা. অমৃতা কুমারী আগারওয়ালার বিয়ের সময় কৌশলে মিথ্যে কথা বলে জ্যোতির নিজস্ব গহনা ও সঞ্চিত টাকা হাতিয়ে নেয় পরিবারের লোকজন। দীর্ঘ দিনেও ওই টাকা ও গহনা ফেরত দেওয়া হয়নি। বরং ওই বিষয়ে কথা বললেই শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। নিক্কি মাদকাসক্ত ও পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ায় এবং এর প্রতিবাদ করায় পারিবারিক অত্যাচারের মাত্রা দিনে দিনে আরও বৃদ্ধি পায়।

সম্প্রতি স্বামী শ্বাশুড়ী দেবর জা মিলে নিয়মিত অমানবিক নির্যাতন অব্যাহত রাখায় জ্যোতি অতিষ্ঠ হয়ে প্রবলভাবে হতাশ হয়ে পড়ে। বুধবার আবারও সবাই মিলে নির্যাতন করায় ক্ষোভে দুঃখে একটি সুইসাইড নোট লিখে বৃহস্পতিবার সকালে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। নিক্কি ও উমা দেবী বিষয়টি জানতে পারলেও গুরুত্ব না দিয়ে ডা. অমৃতা কে দিয়ে ঘরোয়াভাবে চিকিৎসা দেয়।

রাতে অবস্থার অবনতি হলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মাইক্রোবাসে প্রথমে সৈয়দপুর ডক্টরস ক্লিনিকে নেয়া হয়। কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীকে ভর্তি না নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে চারদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে নিজের জন্মদিনের দিন বিদায় নিয়েছে পৃথিবী থেকে।

এইরকম অভিযোগ করে জ্যোতির ভগ্নিপতি জয়পুরহাটের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কালী চরণ জানান, মূলতঃ পুরো পরিবার মিলেই মৃৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে জ্যোতিকে। সুইসাইড নোটেই এব্যাপারে স্পষ্টভাবে লিখে গেছে সে। মৃত্যুর জন্য নিক্কি, উমা দেবী, অমিত ও অমৃতা কে দায়ী করে বিচার চেয়েছে সে। তারা আসলেই অপরাধী বিধায় ঘুমের ওষুধ খাওয়ার পর ইচ্ছে করেই যথাসময়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। যে কারণে নিজের জন্মদিনের দিনেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হলো জ্যোতিকে।

সৈয়দপুর পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু বলেন, ইতোপূর্বেও অনেকবার সুমিত ও জ্যোতির পারিবারিক সমস্যার ব্যাপারে শালিশ বৈঠক করা হয়েছে। এতে স্বামীর পরকিয়া সম্পর্ক এবং শ্বাশুড়ীসহ মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ জানা গেছে। গয়না ও টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমার জানা নাই। আত্মহত্যার ব্যাপারেও আমাকে আগে জানানো হয়নি। মৃত্যুর পর পুলিশের কাজে সহযোগীতা করতে বাসায় গিয়েও ওই পরিবারের কাউকে পাইনি।

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার আসামী সুমিত কুমার আগারওয়ালকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য উদ্ধার সুইসাইড নোটটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এর আগে মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলমসহ নিহতের বাসায় রবিবার দুপুরে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। সবার মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়। এতে স্থানীয় পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে তল্লাশি করে মৃতার নমুনা হাতের লেখা সংগ্রহ করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরও খবর
Copyright &copy 2022 The Daily Uttar Kon. All Rights Reserved.
Powered By Konvex Technologies