সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ৫১বছর পর পাকহানাদার বাহিনীর ৩জন সদস্যকে কুপিয়ে হত্যাকারী অকুতভয় সেই বীর সৈনিক শহীদ হীরালাল গোস্বামীর ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে। “অভিশপ্ত বুলেট হয়তো জানে না, ভালবাসায় যারা বেঁচে থাকে, মৃত্যু তাদের স্পর্শ করতে পারে না”। তেমনি ভাবে মানুষের হৃদয়ে বেঁচে রযেছেন ১৯৭১সাল ২০মে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত বীর সৈনিক শহীদ হীরালাল গোস্বামী। ১৯ আগষ্ট শুক্রবার সকালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাউল করিমের সভাপতিত্বে বীর সৈনিক শহীদ হীরালাল গোস্বামীর ম্যুরাল ওই পরিবারে স্থাপন করা হয়। এই ম্যুরাল স্থাপনের মোড়ক উন্মোচন করেন সিরাজগঞ্জ-৩ তাড়াশ রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা, মো, আব্দুল আজিজ এমপি এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব খন্দকার আব্দুস সামাদ, সাধারণ সম্পাদক শ্রী সঞ্জিত কুমার কর্মকার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি, ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান, থানা অফিসার ইনজার্জ শহিদুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোয়ারা খাতুন মিনি,সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, হীরালাল গোস্বামীর মেয়ে দীপ্তি গোস্বামী ও গোস্বামী পরিবারের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। উল্লেখ্য: ১৯৭১ সালে ২০শে মে পাকহানাদার বাহিনী ভোরে গোস্বামী পরিবারের উপর হামলা চালায়। ইতিমধ্যে ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অন্যত্র আশ্রয় নেয়। তাড়াশ সদরে যখন নাটকীয় তান্ডব চালিয়ে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট শুরু করে তখন তাদের তান্ডবে তাড়াশ সদর জনশূন্য হয়ে পরে। পাকিস্তানি পাকহানাদার বাহিনীর বর্বরচিত অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে হীরালাল গোস্বামী জীবন বাজি রেখে তার মাটির তৈরি ঘরের চাতালে উপর উঠে হাসুয়া ও মরিচের গুঁড়া নিয়ে প্রস্তুত থাকেন। পাকবাহিনীর আক্রমন করলে তিনি তাদের উপর মরিচের গুঁড়া নিক্ষেপ করে। তারা উপরে উঠার সময় হীরালাল গোস্বামী এক পর্যায়ে এঁকে এঁকে ৩জন পাক সেনা সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ সময় পাকবাহিনী পিছু হটে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা নিক্ষেপ করলে ধোঁয়ায় চারিদিক আচ্ছন্ন হয়ে পরে। ওই সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পর চেতনা ফিরে এলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার সময় কতিপয় দেশীয় রাজাকার আলবদর তাকে ঘোলচরা নামক স্থান থেকে ধরে এনে পাক বাহিনীর নিকটে সোর্পদ করে। ওই দিনই তাকে হত্যা করা হয়।