সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: আজ থেকে ৯ বছর আগে বিদ্যুতায়িত হয়ে নিজের দুটি হাত হারিয়েছেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার রায়দৌলতপুর গ্রামের মো. ইমরান শেখ (৪২) । এরই মধ্যে সংসার ছেড়ে চলে গেছে স্ত্রী। মা ও কিশোরী মেয়েকে নিয়ে ভাতা থেকে পাওয়া সহায়তায় চলছে সংসার। এদিকে খাওয়ানো, গোসল করানো ও মল-মূত্র ত্যাগ করার পর সেটি পরিষ্কার করাসহ সব ধরনের কাজ করে দেন তাঁর বৃদ্ধা মা (৭০)। দীর্ঘদিন ধরেই যাপিত এ অসহায় জীবনের অবসান চান এক সময়ের রাজমিস্ত্রি ইমরান শেখ। প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তশালীদের কাছে দাবি জানিয়েছেন, দুটি কৃত্রিম হাত ও স্বাবলম্বী হয়ে চলার মতো একটি প্লাস্টিক সামগ্রীর দোকানের। ইমরান শেখ বলেন, ‘২০১৩ সালে ঢাকার সাভারে রাজমিস্ত্রি কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুতের তার রডের সঙ্গে লেগে আমার দুটি হাত পুড়ে যায়। হাত পুড়ে যাওয়ার ছয় মাস পরে আমার বউ আমাকে ডিভোর্স দিয়ে চলে যায়।’ ইমরান আরও বলেন, ‘হাত হারানোর ৯ বছর ধরে কোনো কাজ করতে পারি না। মায়ের বয়স্ক ভাতার কার্ড আর আমার প্রতিবন্ধী কার্ডের টাকায় কোনোমতে মেয়েকে নিয়ে সংসার চলে। ভাত খাওয়ানো, গোসল করানো ও মল মূত্র ত্যাগ করার পরে সেটি পরিষ্কার করাসহ সব ধরনের কাজ আমার মা করে দেন।’ ইমরান শেখ দাবি করে বলেন, ‘এইভাবে আর কত দিন চলব? মেয়ে সুবর্ণা বিজ্ঞান বিভাগে নবম শ্রেণিতে পড়ে। তাঁকে বিয়ে দিতে হবে! আর বৃদ্ধা মা আর কত দিন বেঁচে থাকবে? মা মারা গেলে আমার জীবন যাপন আরও কষ্ট হবে। তাই সরকার ও সমাজের ধনীদের কাছে দুটি কৃত্রিম হাতের সহায়তা চাই। যাতে নিজের কাজগুলো নিজে করতে পারি। আর আমার কাছে তেমন কোনো অর্থ নেই যা দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারব! কেউ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলে সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারতাম! সেখান থেকে উপার্জনের টাকা দিয়ে মেয়েটাকে বিয়ে দিতে পারতাম’’ ইমরান শেখের বিষয়ে উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরিফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তাঁকে সরকারি ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজসহ সব ধরনের কাজের সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করি।’