রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি ঃ নওগাঁর রাণীনগরে গত সপ্তাহ জুড়ে ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জিয়া খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে আত্রাই নদীতে প্রবেশ করায় আত্রাই উপজেলার বড় কালিকাপুর হিন্দুপাড়া নামক স্থানে হঠাৎ করে জিয়া খালে ভাঙ্গনে বসতবাড়ি হুমকীর মুখে পড়েছে। প্রায় ৪দিন ধরে খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে তীরবর্তী অরক্ষিত অংশে ভাঙ্গন আরো তীব্রতর হচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে দুই-চার দিনের মধ্যে ওই গ্রামের প্রায় অর্ধশত বসতভিটা খালের গর্ভে চলে যাওয়ার আশংকা করছেন গ্রামবাসি। তারা বলছেন, এমন ভাঙ্গন আমরা কখনো দেখেনি। তাদের দাবী আমাদের জন্মস্থান বাপ দাদার ভিটেবাড়ি রক্ষায় স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমনের হস্তক্ষেপে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগীতায় খালের তীরবর্তী অংশে জরুরী মেরামত কাজ শুরু করা হোক।
জানা গেছে, নওগাঁর রাণীনগর-আত্রাই উপজেলার সীমান্তবর্তী কোল ঘেষে প্রভাহিত হয়ে যাওয়া লোলামারা অংশের জিয়া খাল। নওগাঁর ছোট যমুনা নদী ও আত্রাই নদীর মধ্যে শুস্ক মৌসুমে পানির নাব্রতা ধরে রাখার লক্ষ্যে ১৯৭৮-৭৯ অর্থ বছরে তৎকালিন রাষ্টপতি জিয়াউর রহমান আত্রাই উপজেলার বড় কালিকাপুর লোলামারা নামক স্থানে প্রায় ৪ কিলোমিটার খাল খনন কাজের উদ্বোধন করেন। খনন কালিন সময় থেকে এই খালের নামকরণ করা হয় জিয়া খাল। দীর্ঘ সময়ে সংস্কার না করায় খালের একটি বিশেষ অংশে নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বড় কালিকাপুর হিন্দুপাড়া নামক স্থানে হঠাৎ করে খালের পূর্ব তীরবর্তী স্থানে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন গাছপালা খালের গর্ভে বিলিন হতে শুরু করেছে। এই খালের তীব্র শ্রোত আর ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে সপ্তাহ খানিকের মধ্যে ওই পাড়ার বসতবাড়ি খালের গর্ভে বিলিন হতে শুরু করবে এমনটাই আশংকা করছেন গ্রামবাসিরা।
রাণীনগরের সীমান্তবর্তী এলাকা আত্রাই উপজেলার বড় কালিকাপুর গ্রামের সুচন্দ্র প্রামানিকের ছেলে বিলাশ (২৫) বলেন, আমার এই গ্রামেই জন্ম। এখানে প্রায় ৫০ টির বেশি সংখ্যালঘু পরিবারের বসবাস। হঠাৎ করে খালে যেভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে তা বন্ধ করতে না পারলে খালের পাশেই একটি কালী মন্দিরসহ বাপ-দাদার ভিটেবাড়ি কিছুই থাকবেনা। তাই স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগীতা কামনা করছি।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফইজুর রহমান বলেন, আপাতত বড় ধরণের বন্যা এখনো দেখা দেয়নি। তারপর ওই স্থানে ভাঙ্গন যেহেতু দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ভাবেই এটা বাঁশের পাইলিং দিয়ে মেরামত করা না হলে এটা ভাঙতেই থাকবে। যেহেতু আমি বিষয়টি জানলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভাঙ্গন রোধে কি ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমন বলেন, ওই খালের ভাঙ্গনের কথা আপনার মাধ্যমে জানলাম। দুই-এক দিনের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভাঙ্গন রক্ষার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।