স্টাফ রিপোটার: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট’২০২৪ এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সাবেক জাতীয় ফুটবলার মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বীর বিক্রম বলেছেন, আজ দেশে গণতন্ত্র নেই। তাই দেশের খেলার মানও নিচে নেমে গেছে। অথচ এদেশের খেলার মান আরো ভালো হওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, আরাফাত রহমান কোকো দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তার অবদান দেশের মানুষ চিরদিন স্মরণ রাখবে। তিনি আরো বলেন, সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না সরকার। তিনি চিকিৎসা অভাবে কয়েক বছর ধরে অসুস্থ্য অবস্থায় রয়েছেন। বিএনপি আগামীতে জনগণের সমর্থন নিয়ে আবারো রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এদেশে সংস্কৃতিক অঙ্গন আরো বলিয়ান হবে। ক্রীড়াঙ্গনে জোয়ার আসবে। তিনি শুক্রবার ( ৭ জুন) বিকেলে বগুড়া শহরের করোনেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের রাজশাহী বিভাগীয় ম্যাচের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন-নবী খান সোহেল, কমিটির সদস্য সচিব ও সাবেক জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক আমিনুল হক ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, সাবেক এমপি মোঃ হেলালুজ্জামান তালুদকার লালু, হাবিবুর রহমান হাবিব ও শামসুর রহমান শিমুল বিশ^াস, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, সাবেক সংসদ সদস্য ও বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ভিপি সাইফুল ইসলাম, বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা, জয়নাল আবেদীন চাঁন, সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট’২০২৪ এর সদস্য আতিকুর রহমান রুমন, আমিনুল হক দেওয়ান সজল, বগুড়া জেলা বিএনপির সসাংগঠনিক সম্পাদক শহিদ উন নবী সালাম, কেএম খায়রুল বাশার, জাহিদুল ইসলাম হেলালসহ রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। উক্ত খেলায় রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলা দুটি দলে অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে সবুজ দলে বগুড়া. জয়পুরহাট, নওগাঁ ও সিরাজগন্জ জেলা এবং লাল দলে রাজশাহী, চাপাইনবাবগন্জ, নাটোর ও পাবনা জেলা অংশ গ্রহন করে। নির্ধারিত ৭০ মিনিটের খেলা গোল শূণ্য ড্র হলে টাইব্রেকারে সবুজ দল ৪-৩ গোলে লাল দলকে হারিয়ে বিজয়ী হয়। শেষে উভয় দলকে পুরস্কার প্রদান করেন প্রধান অতিথিসহ অতিথিবৃন্দ। খেলায় ম্যান অব দি ম্যাচ নির্বাচিত হন সবুজ দলের গোল রক্ষক টিটন। বিপুল সংখ্যক দর্শকখেলাটি উপভোগ করেন। প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে বিজয়ী দলগুলো নিয়ে ঢাকায় ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে। শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরের পর থেকেই খেলা দেখার জন্য দর্শক মাঠে আসতে শুরু করে। এক সময় করনেশন ইন্সটিটিউশনের মাঠ দর্শকে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আশে পাশের বহুতল ভবনের ব্যালকনি ও ছাদ থেকেও ফুটবলপ্রেমী দর্শকরা খেলা উপভোগ করেন। প্রতিটি দলে ৪০ ঊর্ধ বয়সী ৪ জন করে খেলোয়াড় থাকায় খেলায় ভিন্ন মাত্রা আসে। বগুড়ার বুলবুল, রুকু, সুমী সবুজ দলের হয়ে মাঠে নামেন। এছাড়াও এই দলের হয়ে গোল পোস্ট আগলিয়ে রাখেন প্রীতম।
টাইব্রেকারে বল রুখে দেওয়ার জন্য তিনি দিনের সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছেন। দলের হয়ে বাদশা, মুন্নু, আরাফত, আলামিন, সাব্বির, সুমন, বাধন, সৈকত, রাব্বি, শরিফ, সাগর, তাকওয়া খেলেন। লাল দলের হয়ে গোল সামলিয়েছেন জাতীয় ফুটবলার নেহাল। এছাড়া খেলেছেন সুইট, বুলেট, কলিন, মোনায়েম, বাদল, শিমুল, রাফায়েল ও মানিক। খেলা শুরু থেকে সবুজ দল খেলা নিয়ন্ত্রণে নিলেও মাঝে কিছু সময় খেই হারিয়ে ফেলে। খেলা চলে যায় লাল দলের দখলে। এরপর আবার আক্রমন পাল্টা আক্রমনের মধ্যে দিয়ে খেলা এগিয়ে যায়। খেলার প্রথমার্ধে উভয় দল গোল পেতে ব্যর্থ হয়। ফলে অমিমাংসিত ভাবে শেষ হয় প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধে একটি সংঘবদ্ধ আক্রমন রচনা করে লাল দল। এই সময় লাল দলের ফরোয়ার্ড রাফেল প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়কে টপকে ব্যাকভলি করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন। তিনি মাঠেই জ্ঞান হারান। পড়ে তাকে জরুরিভাবে এ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় খেলা কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকে। এর কিছক্ষণ পর লাল দলের রক্ষণ ভাগের খেলোয়াড় প্রতিপক্ষ সবুজ দলের খেলোয়াড়কে ডি বক্সে ফাউল করলে রেফরি বাঁশি বাজিয়ে পেনাল্টি শটের নির্দেশ দেন। এসময় গোল রক্ষক নেহাল আপত্তি তোলেন। ফলে খেলা এবারও কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে তবে পেনাল্টি শট থেকে গোল পেতে ব্যর্থ হয় সবুজ দল ফলে খেলা অমিমাংসিত রয়ে যায়। এভাবেই খেলা শেষ হলে সরাসরি টাইব্রেকার দেওয়া হয়। টাইব্রেকারে সবুজদল (৪-২) এর লাল দলকে হারিয়ে জয় তুলে নেয়। খেলা শুরুর আগে মাঠে ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়। খেলা পরিচালনা করেন হারুণ তালুকদার। তাকে সহায়তা করেন পলাশ ও সেলিম। চতুর্থ রেফরি ছিলেন বাবলু।