স্টাফ রিপোর্টারঃ শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির ঘোষিত ফলাফল পুন:গননা ও বিতর্কিত ভোট বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ রিজু। শনিবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত এক মেয়াদে শিবগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় জনগনেব সমর্থন নিয়ে গত ২৯ মে বুধবার শিবগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। আমার নির্বাচনী ছিল প্রতিক মোটর সাইকেল। প্রধানমন্ত্রী এবারই প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে দলীয় প্রতিক না রেখে সবাইকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছেন। দলীয় প্রতিক না রাখার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর একটাই উদ্দেশ্য ছিল তা হলো সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যে প্রার্থী যোগ্য তিনিই জনগনের ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। কিন্তু নির্বাচনের মাঠে বাস্তবতায় ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি প্রত্যক্ষ করে আমি দুঃখিত ও মর্মাহত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক দলীয় প্রতিক না রেখে স্বতন্ত্র ভাবে ভোট করার মহৎ উদ্দেশ্য অনিয়ম ও কারচুপির কারণে ব্যাহত হয়েছে। তিনি সংবাদ সম্মলনে অভিযোগ করেন সরকারীভাবে ভোটার উপস্থিতি ও ভোট প্রদানের হার ৪২% ভাগ দেখানো হয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনের ১১৪টি ভোট কেন্দ্রের প্রতিটি কেন্দ্রে সরেজমিনে আমি সহ এলাকাবাসী ভোটার উপস্থিতির যে সংখ্যা প্রত্যক্ষ করেছি তাতে করে ভোট প্রদানের পুনরায় প্রদানকৃত ভোট গননা করা হলে আমার অভিযোগের শতভাগ সত্যতা পাওয়া যাবে। উক্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিং এজেন্ট মোছা: শেফালী বেগম, সহকারী শিক্ষিকা, শিবগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বিজয়ী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জান্নাতী আকতার টুম্পার মহিলা এজেন্ট মোছা: সাজেদা বেগমকে জাল ভোট দিতে সহযোগিতার বিষয়টি ভাইরাল হয়। মহিলা এজেন্ট সাজেদা বেগম বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিজয়ী মহিলা ভাই চেয়ারম্যান জান্নাতী আকতার টুম্পা নিয়োগকৃত । জাল ভোট প্রদানের বিষয়টি উত্তর বঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানাকে জানানো হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক জাল ভোট প্রদানের সত্যতা প্রমানিত হয়। পুলিং এজেন্ট ও মহিলা এজেন্ট তাদের দোষ স্বীকার করে। যার প্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক একজনকে এক বছর এবং একজনকে ৬ মাস কারাদন্ড প্রদান করেছেন। জাল ভোট প্রদানের সত্যতা প্রমান হওয়া সত্বেও শব্দলদিঘি ভোট কেন্দ্রের ভোট বাতিল না করে উক্ত কেন্দ্রের ভোট ফলাফলের সংগে যুক্ত করা হলো কেন? আমার এই অভিযোগটি প্রমান করে শিবগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচনে শতভাগ অনিয়ম ও কারচুপির দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। শব্দলদিঘি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কারচুপির ভিডিও ফুটেজ আমার নিকট গচ্ছিত রয়েছে।তিনি আরো অভিযোগ করেন, বুড়িগঞ্জ ইউপি এর খাদুইল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, আটমুল ইউপি এর আটমুল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, গুজিয়া ইউপি এর মাঝাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেউলি ইউপি এর বালক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, বুড়িগঞ্জ ইউপি এর জামতলা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, জামুরহাট মাদ্রাসা কেন্দ্র, ত্রিলজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র সহ প্রায় কেন্দ্রে জাল ভোট প্রদানের বিষয়টি মৌখিক জানানো হলে উপস্থিত প্রশাসন কোন প্রতিকার না করে নির্বিকার থাকেন। আমার মোবাইলের হোয়াটসএ্যাপ দ্বারা নির্বাচন কশিশনার রাশেদা সুলতানা, বগুড়া জেলা প্রশাসক শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসারগনকে ছবিসহ মেসেস পাঠিয়েছি। কিন্তু কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। প্রশ্নবিদ্ধ শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন সংগত কারনে আমি বাতিল চাই। প্রয়োজনে উক্ত নির্বাচন বাতিলের জন্য আমি নির্বাচন ট্রাইবুনালে অভিযোগ করিব।তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন পরবর্তী ফলাফল ঘোষনার পর থেকেই ইতিমধ্যে কিচক ইউনিয়ন, আটমুল ইউনিয়ন, শিবগঞ্জ ইউনিয়ন, ময়দানহাটা ইউনিয়ন, বিহার ইউনিয়ন, রায়নগর ইউনিয়ন সমুহের আমার অনেক কর্মী সমর্থক, শুভকাংখীকে মারপিট করা হয়েছে। ময়দানহাটা ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ আরিফ ও রেহাই পায় নাই। প্রশ্নবিদ্ধ ফলাফলের বিজয়ী শিবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তার লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীগন দ্বারা এখনও কারো পুকুরে বিষ প্রয়োগের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কাউকে কাউকে মাদ্রাসায় যেতে নিষেধ করা হচ্ছে, কাহারও দোকান ঘরে তালা মারা হয়েছে। আমার কর্মী সমর্থকগন বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে দিন অতিবাহিত করছে। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকদের সংবাদটি প্রচার করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।