মহাদেবপুর (নওগাঁ) সংবাদদাতা ঃ এক সময়ের ধান চাষের জন্য বিখ্যাত জেলা নওগাঁর বরোন্দ্র অঞ্চল হিসেবে খ্যাত নওগাঁর মহাদেবপুর, পোরশা ও সাপাহার উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে আম চাষ। ইতিমধ্যেই এ এলাকা আমের নতুন রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। উৎপাদনের দিক থেকে আম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত জেলা রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ছাড়িয়ে গেছে এ এলাকা। আম চাষ ধানের চেয়ে লাভজনক হওয়ায় এ এলাকার কৃষকরা দিন দিন আম চাষে ঝুঁকছেন। এতে প্রতিবছরই সৃষ্টি হচ্ছে আমের নতুন নতুন বাগান। আমকে কেন্দ্র করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বরেন্দ্র অঞ্চলের অর্থনীতি। আম বাগানের পরিচর্চা ও আম কেনা বেচার কাজে কর্মসংস্থান হচ্ছে হাজার হাজার শ্রমিকের। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে জেলায় ৩৩ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র মহাদেবপুর, পোরশা ও সাপাহার উপজেলাতেই রয়েছে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর আম বাগান। এসব বাগানে কাটিমণ, গৌরমতি, বারিসহ দেশি বিদেশী ১৬ জাতের আম চাষ করছেন চাষিরা। এ জেলায় এবার ৪ লাখ ৩১ হাজার ৫শ টন আম উৎপাদনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। মাটির গুনা গুনের কারণে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এ এলাকার আম বেশি সুস্বাদু ও মিষ্টি। এ কারণে এখানকার আমের চাহিদা বেশি। স্থানীয় প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময়সূচি অনুযায়ী গত ২২ মে থেকে স্থানীয় জাতের আম বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এর পর আমের প্রকারভেদে ৩০ মে থেকে গোপালভোগ, ২ জুন থেকে খিরশাপাত ও হিমসাগর, ৫ জুন থেকে নাকফজলী, ১০ জুন থেকে ল্যাংরা ও হাড়িভাঙ্গা, ২০ জুন থেকে আমরুপালী, ২৫ জুন থেকে ফজলী এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা বারি গৌরমতি ও কাটিমণ আম বাজারে আসবে। মৌসুমের শুরুতে প্রচন্ড শীত ও মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে প্রচন্ড তাপের কারণে এবার আমের ফলন কিছুটা কম হবে বলে আশংঙ্কা করছেন কৃষকরা। তবে বাজারে দাম ভালো থাকায় এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছেন কৃষকরা। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারো নওগাঁয় উৎপাদিত আম বিদেশে রপ্তানি করার প্রক্রিয়া চলছে। এ জন্য কৃষি বিভাগ থেকে রপ্তানি উপযোগী আম উৎপাদন করার জন্য কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা প্রদান করা হচ্ছে।