কিশোর পরিতোষ সরকারের ফেসবুকে একটি ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতভর রংপুরের পীরগঞ্জে মাঝিপাড়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সেই কিশোর পরিতোষ সরকারকে সোমবার রাতে সীমান্ত জেলা জয়পুরহাট থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে সীমান্ত জেলা জয়পুরহাট থেকে কিশোর পরিতোষ সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেখানে আত্মীয়ের বাড়িতে পরিবারসহ পালিয়ে ছিলেন পরিতোষ। উস্কানিমূলক ছবি পোস্ট করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতভর রংপুরের পীরগঞ্জে মাঝিপাড়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পর ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। এ ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল রংপুরে পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের উত্তর করিমপুর কসবা মাঝিপাড়াসহ আশপাশ গ্রামগুলোতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মোতায়েন করে সেখানে চিরুনি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এদিকে জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের মাঝে খাবার, পরিধেয় বস্ত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্টটি দেয় রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের প্রসেনজিত সরকারের ছেলে পরিতোষ সরকার। ঘটনাটি পীরগঞ্জ থানায় জানিয়ে পরিতোষকে গ্রেফতারের দাবি করে স্থানীয়রা। এনিয়ে রোববার বিকেল থেকে উত্তেজনা চলছিল ওই এলাকায়। থানা পুলিশ সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পৌর মেয়র, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ পরিতোষের বাড়িতে অবস্থান নেয়। বিক্ষুব্ধ জনতাও ঘিরে ফেলে বাড়ি। এর আগেই সপরিবারে পালিয়ে যায় পরিতোষ। রাত ৯টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত তার বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দুরে করিমপুর-কসবা-মাঝিপাড়া এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়ির সামনে এবং রাস্তার ধারের অনেক খড়ের গাঁদায়ও ১৮টি ঘর ও একটি দোকানে দেয়া হয় আগুন।