তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেছেন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বগুড়ায় পর্যায়ক্রমে হাইটেক পার্ক, শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর এন্ড ইনোভেশন সেন্টার এবং পুন্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনকিবিউসন সেন্টার স্থাপন করা হবে। এ জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বগুড়ায় পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি অডিটোরিয়ামে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বগুড়ায় হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হবে এর ফলে বগুড়া ও পার্শ্ববর্তী জেলার লক্ষ লক্ষ তরুণ তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে এই হাইটেক পার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এখানে তৈরী হবে কম্পিউটার ডিভাইস এবং তা বিদেশে রপ্তানী করা হবে। সেই কারণে হাইটেক পার্কের ১০২ একর জায়গা দেখার উদ্দেশ্যে টিএমএসএস মম ইন বিনোদন পার্ক পরিদর্শন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে টিএমএসএস জায়গা দিয়ে সহায়তা করবে। এখানে গড়ে উঠা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হোটেল থেকে দক্ষ জনশক্তি পাওয়া যাবে। টিএমএসএস’র সাথে সরকারের একটা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপের ভিত্তিতে এই হাইটেক পার্ক আরো বেশী সফল হবে। মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সরকার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দেবে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে আইসিটি বিভাগ। এজন্য একটা ডিজিটাল বিপ্লব আমরা ঘটাতে চাই। হার্ডওয়ার, সফটওয়ার, ইলেকট্রনিক্স এবং সার্ভিস সেক্টরে যাতে বিশেষায়িত শিল্প গড়ে উঠে সে লক্ষেই কাজ করা হচ্ছে। বগুড়াতেও সফলভাবে বিপ্লব সাধিত হবে। এখানে ২০ হাজার তরুণ তরুণীর কর্মসংস্থান হবে। তিনি বলেন, দেশে ৩৯টি হাইটেক পার্ক স্থাপিত হলে আগামী ৫ বছরে ৩ লক্ষাধিক কর্মসংস্থান হবে। এছাড়াও ৬৪ জেলায় ৬৪টি আইটি ট্রেনিং প্রশিক্ষণ সেন্টার থেকে আগামী ৪১ সাল নাগাদ ১০ লক্ষ তরুণ তরুণী প্রশিক্ষণ এবং ৫ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের লক্ষ্য ৩০ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং বগুড়া জেলা থেকে যাতে উল্লেখ যোগ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় সেই লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকার কাজ করছে। বগুড়া দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বগুড়া সারা বিশ্বের কাছে নতুন ডিজিটাল ইকোনোমিক হাব হিসাবে পরিচিতি পাবে। বগুড়া হবে ডিজিটাল শিল্প নগরী। এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ, টিএমএসএস এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা বেগম, পুন্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোজাফ্ফর হোসেন, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আ.ন.ম রেজাউল করিম প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাগেবুল আহসান রিপু, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেফাজত আরা মিরা, সাধারণ সম্পাদিকা সাবিয়া সাবরিন পিংকি, বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশিষ পোদ্দার লিটন, শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছানোয়ার রহমান ছান্নু, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
উক্ত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো বলেন, বিগত সরকার বগুড়ার মাটি এবং জনগণকে ব্যবহার করলেও বগুড়ার উন্নয়নে তেমন কিছুই করেননি। আওয়ামী লীগ সরকার সুষম উন্নয়নে বিশ্বাসী। তাই শিল্পে অনগ্রসর বগুড়া জেলায় বেকার শিক্ষিত যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই হাইটেক পার্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে এলাকার প্রায় ২০ হাজার যুবকের কর্মসংস্থান হবে।
টিএমএসএস এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা বেগম বলেন, সরকারের সাথে পার্টনার শীপে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। এ জন্য ১০২ একর জমি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া পুন্ড্র ইউনিভার্সিটিতে একটি ফ্লোর সরকারকে আইটি ট্রেনিং এর জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। তিনি জানান, এলাকার যুবকদের কর্মসংস্থান যাতে দ্রুত করা যায় এজন্য টিএমএসএস সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।
জেলা যুবলীগের সভাপতি লিটন পোদ্দার জানান যুবকদের কর্মসংস্থানে সরকারের সদিচ্ছা সব সময় রয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার কখনো বৈষম্য করে না বগুড়া হাইটেক পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বিকাল ৩টায় প্রতিমন্ত্রী টিএমএসএস মম ইন বিনোদন জগতে করোনায় ক্ষতি গ্রস্থ গরিব দুঃস্থ মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এ ছাড়াও তিনি সুজাবাদ, বনানীতে টিএমএসএস ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড আইসিটি ক্যাম্পাসে শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর এন্ড ইনোভেশন সেন্টার স্থাপনের স্থান পরিদর্শন করেন এবং টিএমএসএস’র বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।