কুড়িগ্রাম ।।কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বন্যায় কাঠের সেতু ভেঙ্গে যাওয়ায় স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১৫ হাজার মানুষের পাড়াপাড়ের একমাত্র ভরসা এখন ড্রামের তৈরী ভেলা। ফলে প্রতিনিয়িত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ড্রামের ভেলায় পাড়াপাড় করছেন। পাড়াপাড় করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থীসহ অনেকেই দুঘটনার শিকার হচ্ছেন।উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গত ৪ বছর আগে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে নীলকমল নদীর উপর কাঠের সেতুটি তৈরী করেন।
সেতুটি তৈরীর পর থেকেই বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম, বুড়ির চর, চরমেখলি, চর ধনিরাম, ঘোগারকুটিসহ পাঁচ গ্রামের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পাড়াপাড় করতেন। গত ২০১৯ সালের আম্পানের আঘাতে কাঠের তৈরী সেতুটি ভেঙ্গে গেলে চরম দুর্ভোগের শিকার এলাকাবাসীর। ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীর নিজ উদ্যোগে ভেঙ্গে যাওয়া সেতুটি মেরামত করে পাড়াপাড়ের উপযোগী করে তুললেও ২০২০ সালের বন্যায় আবারও সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় আবারও মানুষের মাঝে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। সেতুটি নির্মানের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পায়নি এলাকাবাসী। পরে বাধ্য এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে পাড়াপাড়ের জন্য ড্রামের ভেলা তৈরি করে শিশু-বৃদ্ধসহ হাজারও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ড্রামের ভেলায় পাড়াপাড় করছে। স্থানীয় কমলা কান্ত রায়, আব্দুল হাই ও আসমত আলীসহ অনেকেই জানান, কয়েক বছর আগেই বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে কাঁঠ দিয়ে একটি সেতুটি নির্মান করেন। নির্মিত সেতুটি দিয়ে আমরা দীর্ঘদিন পাড়াপাড় করলেও সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় আমাদের চরম দুর্ভোগ ও মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে ড্রামের ভেলায় পাড়াপাড় করছি। নীলকমল নদীর ওপারে থাকা অভিভাবক ফাতেমা বেগম জানান, আমার ছেলে ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজ পড়েন। সেতু না থাকায় আমার ছেলেটা কলেজ যেতে চায় না। শুধু আমার ছেলে নয় এই এলাকার অধিকাংশ স্কুল-কলেজে পড়া ছেলে-মেয়ে ড্রামের ভেলায় নদী পাড় হতে ভয় পায়। তাই তারা ড্রামের ভেলার ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজ যেতে চাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজ যাওয়াটা খুবেই জরুরী। তাই দ্রুত এখানে একটি সেতুটি নির্মানের দাবী জানান। ধনিরাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আইরিন আক্তার জানান, প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর বাড়ী নীলকমল নদীর ওপাড়ের। সেতু না থাকায় স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগ ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ড্রামের ভেলায় পাড়াপাড় করলেও শিক্ষার্থী ড্রামের ভেলায় ঝুঁকি থাকায় ভয়ে অনেকেই পাড়াপাড় করেন না। তাই ওপারের শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবেই কম। তিনি দ্রুত ঐ স্থানে একটি সেতু নির্মানের জন্য জোড় দাবী জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খয়বর আলী মিয়া জানান, সেতুটি নির্মানের জন্য এলজি এসপি প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত আছে। সামনের শুকনো মৌসুমে একটি কাঠের সেতু নির্মান করা হবে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস জানান, বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের জানা আছে, সেতু নির্মানের কার্যকারী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।