ঢাকা : পুলিশ-আদালত-সরকার একসাথে মিলে বিরোধী দলের উপর নিষ্পেষণ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সোমবার(৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া মঞ্চের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গত শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে একটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, দেশে এখন আইনের শাসন নেই, আছে শেখ হাসিনার শাসন। তাদের দলের (আওয়ামী লীগ) মধ্যে টুকাটুকি কানাঘুষা চলছে শোনা যায়। শুনতে পাচ্ছি গত পড়শু তাদের ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়েও চড়থাপ্পর বিনিময় হয়েছে। গণমাধ্যমে আসেনি। দলের মধ্যেই যখন এই অবস্থা সেখানে আমার আপনার দরকার নেই। তারা তারাই যথেষ্ট। ঝাঁড়ু নিয়ে রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, আমাদের একটা ‘আনক্লীনড ব্যাম্বো’ নিয়া রাস্তায় দাঁড়াতে হবে। আনক্লীনড বাঁশ। কারণ ক্লীনড বাঁশ বোধহয় যথেষ্ট নয়। এখন আমাদের সেই বাঁশের লাঠি নিয়া আন্দোলন করতে হবে। আমি আশা করি, শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) মাইন্ড করবেন না।
কারণ ৭ই মার্চ তো শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, যার যা আছে লাঠি-বাটি। যদি তাই না হয় ঝাঁড়ু দিয়ে নামতে হবে। আমাদের এখানে নারী নেত্রী বিলকিস যদি ঝাঁড়ু নিয়া নামেন-এটাই এনাফ। এর বেশি কিছু লাগবে না আমার মনে হয়।
দেশের সকল প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করে ফেলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে সরকার এবং রাষ্ট্র দুই শব্দ যে আলাদা এই সরকার তা বুঝতে চায় না। আজকে প্রশাসনিক রোলারদের মতো তারা বিচার বিভাগকেও নিয়ন্ত্রণ করছেন, পরিচালিত করছেন। বিচার বিভাগকে হস্তক্ষেপ করা বা নিয়ন্ত্রণ করার ন্যুনতম সুযোগটা কিন্তু দন্ডনীয় অপরাধ।
নৈতিকভাবে কোনো আইনে তারা এটা পারে না। কিন্তু মন্ত্রীরা যখন বক্তৃতা দেয়, পরেরদিন যদি কোনো বিচারের জাজমেন্ট হয়- দেখা যায় মন্ত্রীদের কথা হুবহু সেটাতে আছে। তার মানে ওমুক অ্যারেস্ট হবে, অমুকের ফাঁসি হবে, অমুকের জেল হবে, দেখবেন জাজমেন্টটা তেমন হয়। তার মানে কী ? কোনো সাবজুডিস বিষয়ে যখন সরকারের মন্ত্রীরা যদি কথা বলে সেখানে আদালত প্রভাবিত হতে পারে। সাবজুডিস বিষয় কথা বলা নিষিদ্ধ। কিন্ত তারা এটা অনবরত করে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, প্রমাণ নেই, আমরা শুনতে পাই সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহাকে শারীরিকভাবেও লাঞ্চিত করা হয়েছিল। এই যদি হয় একজন বিচারপতির অবস্থা।
ক্ষমতাসীন সরকার-পুলিশ আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে, এক হয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন করছে বলেও অভিযোগ করেন গয়েশ্বর। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া মঞ্চের প্রধান আবদুস সালামের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন─ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিস ইসলাম প্রমুখ।