ঢাকা : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আজকে বাংলাদেশকে যে রাষ্ট্রে পরিণত করেছে, এটি আমাদের রাষ্ট্র নয়। আওয়ামী লীগ আজকে দেশের জনগণের সবচেয়ে বড় শত্রুতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল আমরা চমৎকার একটা রাষ্ট্র গঠন করব। যে রাষ্ট্রে মানুষের অধিকার থাকবে, যে রাষ্ট্রে মানুষ কথা বলতে পারবে, স্বাধীন সংবাদমাধ্যম থাকবে। আজ রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা যে রাষ্ট্র, সমাজ চেয়েছিলাম সেটা হবে একটা মুক্ত সমাজ, গণতান্ত্রিক সমাজ। আর অন্য কোনো দেশের পরাধীন হয়ে থাকা নয়। একটি স্বাধীন-সার্বভৌম মুক্ত দেশ আমরা চেয়েছিলাম। এবং সেই লক্ষ্যে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরেও এই দলটি ক্ষমতায় আছে। তারা সেদিনও ক্ষমতায় ছিল। তারা ক্ষমতায় এসে প্রথম যে কাজটি করেছে এই দেশের মেজরিটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে তারা ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে। তারা এখানে কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে দেয়নি। যে সংবিধান তৈরি করেছিল, সেটাকে তারা কাটাছেঁড়া করেছে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। সেই সময় যারা ভিন্ন মত পোষণ করেছে, তাদেরকে তারা অত্যাচার করেছে হত্যা করেছে।’ সংকট এখন পুরো জাতির মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলেন বিএনপির সংকট। সংকটে বিএনপি নয়, সংকট হচ্ছে গোটা জাতি। এই কথাটা আমাদেরকে বুঝতে হবে। এবং এই কথাটিই জনগণকে বুঝাতে হবে। আজকে গণতন্ত্র নেই, নির্বাচন হয় না, কোনো জবাবদিহিতা নেই, যে যেখানে পারছে চুরি করছে, ডাকাতি করছে। আইন-শৃঙ্খলা বলতে কিচ্ছু নেই। এই দেশ তো আমরা চাইনি।’ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইভ্যালিসহ দশ-বারোটি প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছ থেকে বহু টাকা লুটে নিয়েছে। কিন্তু এটার আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে পারেনি সরকার।’
সরকার ইসলাম ধর্মের উপর আঘাত করছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন। ইসলাম ধর্মের উপর তারা একের পর এক আঘাত হেনেছে। এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। দাড়ি-টুপি পরা মানুষ দেখলে তারা সন্দেহের চোখে বলে- এরা জঙ্গি। এই জঙ্গি হিসেবে কতজনকে তারা হয়রানি করেছে তার হিসাব নেই। পশ্চিমাবিশ্বের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য তারা কাজটা করছে।’
তিনি আরো বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ যোগ করেছিলাম। তিনি কাজটি করেছিলেন কারণ শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষের যে ধর্মবিশ্বাস, সেটিকে মর্যাদা দেয়ার জন্য। কিন্তু এরা (সরকার) খুতবা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগের হাতে কোনো ধর্মই আজ নিরাপদ নয়। আজকের বাস্তবতা হচ্ছে এদের কাছ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে।” ওলামা দলের আহ্বায়ক প্রিন্সিপাল মাওলানা নেসারুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদারের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন – বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো: রহমতুল্লাহ প্রমুখ।