কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে চলতি বছর বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকরা। নষ্ট হয়েছে সদ্য রোপা আমন চারা, বীজতলা, ও বিভিন্ন শাক সবজি ক্ষেত। বেঁচে গেছে বিভিন্ন পুকুর ও ঘেরের মাছ। কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে তথ্যমতে, চলতি বছর কুড়িগ্রামের ২৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, চলতি বন্যায় জেলার ২৯১ টি পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ২৬২ জন মৎসজীবি । সব মিলিয়ে সম্প্রতি দুই সপ্তাহের বন্যায় শুধু কৃষিখাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩১ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা । ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সংখ্যা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৯ জন। এছাড়াও পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় মৎস্য বিভাগের ক্ষতির পরিমাণ ৭৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র আরও জানায়, গত ৩১ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রোপা আমনের। সবজি চাষীরা তুলনামূলক কম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ১ হাজার ১৯৫ হেক্টর সবজির মধ্যে ৬১ হেক্টর সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে। আরও ৬৭ হেক্টর বীজতলা পচে চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, নাগেশ্বরী ও উলিপুর উপজেলায়। কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, এবছর বন্যায় ৪৪ দশমিক ৬০ হেক্টর আয়তনের ২৯১ পুকুর প্লাবিত হয়ে ৬৪ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে । এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ ২৬২ জন মৎস্যচাষী। মোট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭৪ লাখ ৫১ হাজার টাকার। কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় গোচারণ ভূমি ডুবে যাওয়ায় গবাদি পশুরও অনেক সমস্যা হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুরুল হক জানান, সরকারিভাবে যে বীজতলা দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকেও কৃষক বীজ নিয়ে কাজে লাগাচ্ছেন। এতে বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে কৃষকরা ঘুরে বেড়াতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।