কুড়িগ্রাম : বড় স্বপ্ন বড় আশা নিয়ে মাঠে নেমেছিল চিলমারী কৃষক। ফসল ফলিয়ে দেখবে সুখের আলো। কিন্তু সব স্বপ্ন সব আশা নিমিষেই ভেঙ্গে দিল বন্যা আর টানা বৃষ্টি। বন্যার থাবায় চোখের সামনে ফসল নষ্ট হতে দেখে নীরবেই কষ্ট আর দুঃখে কাটাচ্ছে কৃষকের দিনকাল। বানের পানি শুকানো শুরু করলেও শুকায়নি কৃষকের চোখের জল। ৩৫০০ হেক্টর ক্ষতিতে লোকসান গুনছে প্রায় ২৫ হাজার কৃষক।
জানা গেছে, আমন চাষের শুরুতে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা ছিল খড়া আর অনাবৃষ্টির কবলে। সময় পেরিয়ে রোদ আর খড়া মাথায় নিয়ে মাঠে নেমেছিল কৃষক। মাঠে মাঠে আমন চাষে ভরে গিয়েছিল, মন ভরে শান্তির নিঃশ্বাস নিয়েছিল কৃষক।
কিন্তু শান্তি আর সুখে হঠাৎ হানা দেয় বানের পানি। কৃষকরা যখন খড়ার মধ্যেই সেচ নিয়ে চাষ শেষ করেছিল ঠিক সেই সময় হঠাৎ বন্যা আর টানা বৃষ্টি তাদের স্বপ্ন আর বুক ভরা আশা নিমেষেই ডুবে নেয়। ডুবতে ডুবতে প্রায় ৫হাজার হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে যায়। সেই সাথে ডুবে যায় হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্ন। নষ্ট হয়ে যায় সকল আশা। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী উপজেলার প্রায় ৩৫০০ হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতিতে প্রায় ২৫ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও কৃষকদের মতে এর চেয়েও বেশি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শান্তিনগর এলাকার আঃ ছালাম বওলা এলাকায় ৩বিঘা জমিতে প্রায় ১৬ হাজার টাকা খরচ করে চাষ করেছিল, কিন্তু বন্যায় সব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পড়েছেন বিপাকে। একই এলাকার কৃষক রফিয়াল কষ্ট করে সেচ দিয়ে ৫৫ শতক জমি চাষ করলেও তা বন্যা সব খেয়ে গেছে কিভাবে চাষ করবে এবং আগামী দিন গুলো বউ বাচ্চা নিয়ে কি ভাবে চলবে সেই চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। শুধু আঃ ছালাম আর রফিয়াল নয় হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্ন আর আশা বন্যা খেয়ে নেয়ায় নিরবে কষ্ট আর দুঃখ নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা। চোখের জল চোখেই শুকিয়ে গেলেও নেই যেন কেউ তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এভাবে বন্যা সকল স্বপ্ন সকল আশা শেষ করে দিবে তা ভাবতে পারিনি মন্তব্য করে শরিফের হাট এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, যা রোপন করেছিলাম সব তো বানে খেয়ে নিল বড় মুশকিলে পড়েছি। চারা পাওয়া মুশকিল এবং দামও অনেক বেশি তাই ভাবছি চাষ করবো কি? না বললেন মাছাবান্দা এলাকার কৃষক খয়বার। উপজেলা কৃষি অফিসার প্রণয় কুমার বিষান দাস বলেন, হঠাৎ বন্যায় প্রায় ২৫ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, আমরা চেষ্টা করছি তাদের সহায়তা করার জন্য।