বগুড়া: বগুড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলাকে কেন্দ্র করে উচ্ছ্বসিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। এদিকে দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সন্তানের শিক্ষাজীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পরা অভিভাবকরা মনে স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। স্কুলে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে শিক্ষার্থীরাও। বিশেষ করে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের ‘গৃহবন্দি’ শিক্ষার্থীরা।
বগুড়া জেলার বেশিরভাগ স্কুলের প্রধানগণ এখন স্কুল পরিস্কার কাজ করছেন। বিদ্যালয় খোলার আগমূহুর্তে প্রতিটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ, টেবিল, চেয়ার, বেঞ্চ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের কার্যক্রম চলছে। গত কয়েকদিনে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুত হয়েছে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল, বগুড়া ওয়াইএমসিএ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজসহ বিভিন্ন স্কুল। স্কুল কর্তৃপক্ষ এখন শিক্ষার্থী আসবার অপেক্ষা করছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাতধোয়ার বেসিন স্থাপন, স্বাস্থ্যবিধি মানাতে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য হাতধোয়ার সঠিক নিয়ম, মাস্ক পরার নিয়ম, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচারও টাঙানো হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কোনায় কোনায় জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। আবার কেউ কেউ শিশুদের খেলনাগুলোতে ধুলোবালি পরিষ্কার করছেন। পুরো ক্লাসরুমকে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করছেন পরিছন্নকর্মীরা। ইলেক্ট্রিশিয়ান দিয়ে প্রতিটি ক্লাসরুমের বাতি ও ফ্যানগুলোকে চেক করাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বগুড়া ওয়াইএমসিএ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রবার্ট রবিন মারান্ডি জানান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম বিগত সময়েও ছিল এখনো অব্যাহত আছে। করোনাকালিন সময়েও পরিস্কার করা হতো। মাঠের ঘাস থেকে শুরু করে সব পরিস্কার করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চ এবং কক্ষের দেয়ালে জমে থাকা মাকড়সার জাল অপসারণ করা হচ্ছে। গাদাগাদি বা ঠাসাঠাসি করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করার সুযোগ নেই। মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটারাইজের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে শিক্ষার্থীদের জন্য। ঘন ঘন হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। একবেঞ্চে দুইজন শিক্ষার্থী বসানো হবে।
বগুড়া ওয়াইএমসিএ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট বার্নাড তমাল মন্ডল জানান, দীর্ঘদিন বন্ধের পর স্কুল খুলবে, এই খবরে খুশিতে আত্মহারা কোমলমতি শিশুরা। তারা স্কুলে যাবে, নতুন বই পড়বে। নতুন বন্ধু-বান্ধবী হবে। স্কুলের প্রতিটি ক্লাসে দেখা যাবে তাদের হৈ-চৈ ও আড্ডা। দীর্ঘদিন পর স্কুলমাঠগুলো পূর্ণতা পাবে তাদের পায়ের ছোঁয়ায়। অভিবাবকরা বলছেন, দীর্ঘ সময় পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষাজীবন নিয়ে সন্তনানদের নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিল। স্কুল খোলার সংবাদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্কুলে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে তারা। করোনাকালীন সময়ে তারা ভার্চুয়াল পাঠদান গ্রহন করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে এটি একটি আবদ্ধ পরিবেশ। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেই প্রযুক্তি নির্ভর ও গৃহবন্দি থেকে মুক্ত জীবনে ফিরতে পারবে।