জেলা প্রশাসনের অধীনে বগুড়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের অনিয়ম, দূর্নীতির তদন্ত এবং নির্বাচনের দাবিতে সংগঠনের সাধারন সদস্যরা শনিবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। লিখিত বক্তব্যে মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমার সদস্য নং ৬৯৮/১৬ এবং শহীদুল ইসলাম খোকন সদস্য নং ১৪৬০/১৬। আমরা পেশায় উভয়ই ড্রাইভার। আপনারা জানেন বগুড়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন দীর্ঘদিন যাবৎ, পেশায় শ্রমিক নয়, এমন বেশ কিছু মাফিয়াদের দ্বারা কুক্ষিগত হয়ে দূর্নীতির আখরায় পরিণত হয়েছে। আমরা সাধারণ শ্রমিকদের সাথে নিয়ে এই মটর শ্রমিক ইউনিয়কে দূর্নীতি ও মাফিয়া নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করতে দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়মতান্ত্রিক লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লড়াই সংগ্রামের ফসল হিসাবে দীর্ঘ ১২ বছর পর ২০২১ সালে নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য জনক ভাবে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী রেজিমের সহযোগিতায় অর্থাৎ তৎকালীন যুবলীগ সভাপতি লিটম পোদ্দারকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বানিয়ে, নির্বাচন নামক প্রহসনের মাধ্যমে আমদের হারিয়ে, বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে মাফিয়াদের বিজয়ী ঘোষনা করে। ঐ মাফিয়া গোষ্ঠী শ্রমিক ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রন গ্রহনের পর হতে, সমস্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, স্বৈরাচারী কায়দায় শ্রমিক ইউনিয়ন পরিচালনা করতে থাকে। পূর্বের কমিটির ১২ বছরে ৮৭ লক্ষ্য টাকার তালা ক্রয় ভাউচার সহ ১২ বছরের পুরা আয় ব্যয়ের হিসাব অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনা করে, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রতিশ্রুতি থাকলেও তারা, অন্যায় ভাবে বাধ্য কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহন করে নাই। ৩ বছরের জন্য ভূয়া ও ডামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে, প্রতি বছর সভা না করে, ৩য় সাধারণ সভার মেয়াদ ৭ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে পার করেছে। ২৬ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে ত্রি বার্ষিক নির্বাচনের মেয়াদও পার করেছে। বর্তমানে তারা পূর্বের ন্যায় কালক্ষেপন করে অবৈধ ভাবে টিকে থাকার পায়তারা করিতেছে। সাধারণ সভার নাটক মঞ্চস্থ করে ৩ বছরের আয় ব্যয়ের হিসাব বৈতরনী হৈহুল্লুরের মাধ্যমে পার হওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। ৭ অক্টোবর ২০২১ সালের সাধাণ সভার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, প্রতিজনের মৃত্যুদাবী ৬০,০০০/- টাকা ঘোষনা করা হয়েছে। সে হারে তারা (৫০ জন ঢ ৬০,০০০)= ৩,৩০,০০,০০০/- (তিন কোটি ত্রিশ লক্ষ্য টাকা) মৃত্যু দাবি, বিবাহ প্রনোদনা (২০০০ জন ঢ ১০,০০০) = ২,০০,০০,০০০/- (দুই কোট টাকা) বকেয়া সেই সাথে, বৃদ্ধ ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, বকেয়া পরিশোধ না করে, গোজামিল দিয়ে কালক্ষেপন করিতেছে।
শ্রমিক পরিচয় প্রত্রে মৃত্যুদাবী, বিবাবহ প্রণোদনা, বৃদ্ধভাতা, চিকিৎসা ভাতার প্রতিশ্রুতি না করায় তাহা গঠনতন্ত্র থেকে বাদ দেওয়ার পায়তারা বলে আশঙ্খা করিতেছি। সিএনজি শ্রমিকদের সিএনজি আটকিয়ে বাধ্যতা মূলক ১০,১০০ টাকা ভর্তির নামে চাঁদাবাজী অব্যহত রেখেছে। এছাড়াও মৃত শ্রমিককের পরিচয় পত্র ব্যবহার করে, অবৈধ ভাবে অর্থের বিনিময়ে নতুন শ্রমিক ভর্তি করিতেছে। তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে যেয়ে তাদের গুন্ডাবাহিনীর আক্রমনে ক্ষতবিক্ষত পঙ্গু শ্রমিক আদমদিঘীর কুন্দ্রগ্রামের বাবু, মামলা করেও প্রতিকার পাচ্ছে না। উল্টো তাকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অডিটর টিমের সাথে কথা বলতে চাওয়ায়, তাদের গুন্ডা বাহিনী জাহিদুল ইসলামকে বেদম প্রহার করে শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয় হতে বের করে দেয়। মৃত্যু দাবীর টাকা চাওয়ায় মৃত শ্রমিদের ওয়ারিশ গণকে প্রতিনিয়ত লাঞ্চিত করে শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা ১৩/১১/২০৪ ইং তারিখে সাধারণ শ্রমিকদের গনস্বাক্ষর সহ ৫ দফা দাবী বাস্তবায়নে, প্রধান উপদেষ্টা, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা, শ্রম ও সচিব, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর রাজশাহী, আঞ্চলিক শ্রমদপ্তর বগুড়া, জেলা প্রশাসক বগুড়া, পুলিশ সুপার বগুড়া বরাবরে অভিযোগ করেছি।
৫ দফা দাবি সমূহ নিম্নরূপ:
১। পূর্বের কমিটি ও বর্তমান মেয়াদোত্তীন কমিটির আয় ব্যয়ের হিসাব পর্যালোচনার জন্য, শ্রমিক ইউনিয়নের দায়িত্বভার জেলা প্রশাসনের অধীনে নিতে হবে। ২। ভূয়া শ্রমিক ছাটাই এবং শ্রমিক ভর্তি বন্ধ করে, সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে স্বচ্ছ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। ৩। নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট বা তাদের দোষরদের রাখা যাবে না। ৪ । শ্রম অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসনে প্রতিনিধ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বায়ক ও সংবাদ কর্মী ও জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পক্ষের শ্রমিক নেতৃবৃন্দের দ্বারা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করতে হবে। ৫। বগুড়া বার সমিতির আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট ও তাদের দোষরদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষনা করতে হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহন করা না হলে ব্লকেডের মত কঠোর কর্মসূচী দিতে আমরা বাধ্য হবো।”