টানা চার মেয়াদ ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি লুটপাট চালিয়েছে ব্যাংকিং খাতে। ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ শুধু দিনে দিনে বেড়েছেই। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৭ শতাংশ। গত ১৬ বছরের মধ্যে বিতরণ করা ঋণ ও খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ অনুপাত এটি। আজ রোববার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হালনাগাদ বিবরণী থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। গত ১৫ বছর ধরে ব্যাংকিং খাত থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৮২১ কোটি টাকার ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ৪০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ পাঁচ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল দুই লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ব্যাংকগুলোর প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এতদিন যা স্বার্থান্বেষী মহলগুলোর কারসাজিতে চাপা পড়েছিল। ২০০৯ সালের শুরুতে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। এরপর থেকে আওয়ামী সরকারের আমলে ব্যাংক খাতে অনিয়ম ও কেলেঙ্কারি বাড়তে থাকে। ফলে খেলাপি ঋণও ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে।