প্রথম দুই সেশনে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে স্বাগতিকদের অল্পতেই আটকে দেয়ার স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। তবে সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি টাইগার বোলাররা। বলা শ্রেয়, ছন্দ ধরে রাখতে দেননি রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা। তাদের জুটিতে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছে ভারত। চেন্নাই টেস্টের প্রথম দিনে টসে হেরে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান রবিচন্দ্রন আশ্বিন তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শতক। জাদেযাও আছেন সেই পথে। এম এ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে গত ৪২ বছরেরর ইতিহাসে নাজমুল হোসেন শান্তই প্রথম কোনো অধিনায়ক যিনি টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। মাঝে ২০টি টেস্ট অনুষ্ঠিত হলেও এমন সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি আর কোনো অধিনায়ক। টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেয়ার কারণ হিসেবে শান্ত বলেন, উইকেটের শুরুর আর্দ্রতা কাজে লাগাতে চান। উইকেট দেখে মনে হচ্ছে প্রথম সেশনে পেসাররা সুবিধা পাবে। হয়েছেও তাই। অধিনায়কের পরিকল্পনা সফল করছেন পেসাররা। বিশেষ করে হাসান মাহমুদ যেন নতুন বলে নাভিশ্বাস তুলছেন ভারতীয়দের। উদ্বোধনী জুটি ভেঙে নিয়েছেন জোড়া উইকেট। দলকে এনে দিয়েছেন উপলক্ষ। বল হাতে আক্রমণের শুরুটা দারুণ করেছিলেন হাসান মাহমুদ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই প্রথম সাফল্য পেতে পারতো বাংলাদেশ। হাসানের করা গুড লেংথের বল সোজা আঘাত করে রোহিতের প্যাডে। তবে ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। ফলে টাইগাররা রিভিউ নিলে দেখা যায় বল অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে লাইনের মধ্যেই ইম্প্যাক্ট করে। এমনকি উইকেটে হিটিংও করে। তবে আম্পায়ার্স কলের কারণে বেঁচে যান রোহিত। অবশ্য পরের ওভারেই বোলিংয়ে এসে সেই রোহিতকে ফিরিয়েই বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটের স্বাদ দিয়েছেন হাসান। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে রোহিত ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে শান্তর হাতে। ফলে শেষ হয়েছে রোহিতের ৬ রানের ইনিংস। পরের ওভারে এসে তিনে ব্যাট করতে নামা শুভমান গিলকেও আউট করেছেন হাসান। লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে এজ হয়ে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়েছেন গিল। ৮ বল খেলেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। এখানেই শেষ নয় হাসান ঝলকের। দশম ওভারে বল হাতে নিয়ে এবার ফেরার ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকাকে। বিরাট কোহলিকেও দেখান সাজঘরের পথ। হাসানের বলে লিটনকে ক্যাচ দিয়ে কোহলি ফেরেন মাত্র ৬ রানে। ১০ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৪ রান। তবে প্রথম সেশনে আর কোনো উইকেট তুলে নিতে পারেনি টাইগাররা। তবে মধ্যাহ্নভোজের পর থিতু হয়ে যাওয়া রিশাভ পান্তকে ফিরিয়ে চতুর্থ উইকেটের দেখা পান হাসান। রিশাভ আউট হন ৫২ রানে। এরপর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে যশস্বী জয়সাওয়াল চেষ্টা করেন ইনিংসের হাল ধরার। তবে তাকে থামান নাহিদ। ৪১.১ ওভারে উইকেটের পেছনে সাদমান ইসলামকে ক্যাচ দেন তিনি। আউট হবার আগে খেলেন ৫৬ রানের ইনিংস। পরের ওভারেই লোকেশ রাহুলকে (১৬) নিজের শিকার বানান মেহেদী মিরাজ। ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারায় ভারত। তবে এরপর থেকেই বাংলাদেশকে ভোগাতে শুরু করেন আশ্বিন ও জাদেযা। দু’জনে মিলে গড়েন ২২৭ বলে ১৯৫ রানের জুটি। আশ্বিন ১১২ বলে ১০২ ও জাদেযা ১১৭ বলে ৮৬ রানে অপরাজিত আছেন।