সিন্ডিকেট সরকার উদ্ভট কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, প্রতিটি পণ্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ অবস্থায় নিম্ন আয়ের শুধু নয়, মধ্যবিত্তরাও চরমতমভাবে অসহায় হয়ে পড়েছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারছে না মানুষ। আর সিন্ডিকেট সরকার উদ্ভট কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। সম্পূর্ণভাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকার এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দায়ও চাপাচ্ছে বিএনপির ওপর। আজ শনিবার দুপুরে নয়া পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের লুটেরা সিন্ডিকেট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় এখন বাজারের ওপর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রতিদিন মানুষের পকেট থেকে এরা শত শত কোটি টাকা বাড়তি হাতিয়ে নিচ্ছে। মানুষের এখন জান বাঁচানো দায়। ডামি সরকার লোক দেখানো হাঁকডাক দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই এখন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
নিজেদের ব্যর্থতা, লুটপাট-চুরি-চামারি করে সেই অপকর্মের দায় নির্লজ্জের মতো বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার অভ্যাস তাদের পুরানো এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, এই বৈশিষ্ট্য পাড়া-মহল্লার বখাটেদের মতো। বিএনপি যদি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে, তবে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দী কেন? সরকার প্রধান হয়ে যখন অসাধু ব্যবসায়ীদের কনট্রোল করতে পারছেন না, তখন অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে ব্যর্থতার দায় বিএনপির ওপর চাপানোর অপপ্রচার চালাচ্ছেন আপনি। লুটেরা সরকারের ন্যুনতম যোগ্যতা থাকে না বাজার নিয়ন্ত্রণের।
জুজু’র ভয় দেখিয়ে দেশকে পাশ্বর্বর্তী দেশের ওপর নির্ভরশীল করার চক্রান্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রথমবারের মতো কচুরমুখী ও নারিকেল আমদানি করল বাংলাদেশ। চাঁদাবাজির কারণে দেশীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। ভারতের এসব পণ্যের গুণগত মান কম। চাঁদাবাজি নেই বলে দাম কম। সিন্ডিকেটের কারণে বাংলাদেশী এসব কৃষিপণ্যের দাম কিছুটা বেশি। এভাবে চলতে থাকলে কৃষকরা উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। আর এই সুযোগে বাংলাদেশের ওপর পাশ্বর্বর্তী দেশের কতৃর্ত্ব আরো বৃদ্ধি পাবে।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব দীর্ঘদিন যাবৎ কারাগারে ডায়াবেটিস ও লিভারজনিত রোগে ভুগছেন জানিয়ে রিজভী বলেন, কারাকতৃর্পক্ষের অবহেলায় সুচিকিৎসা পাচ্ছে না। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় এখন হাটতেও পারছে না।
অবিলম্বে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের সুচিকিৎসার জোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় তার কিছু হলে সরকারকেই এর দায় বহন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মামুন, অধ্যাপক ড. সাহিদা রফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, অধ্যাপক ইমতিয়াজ বকুল, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ সভাপতি অধ্যাপক আবেদ রাজা প্রমুখ।