বিশ্বজুড়েই অবনতি ঘটেছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়। এ পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে গণতন্ত্র সূচকে দুই ধাপ অবনমন হয়েছে বাংলাদেশেরও। সম্প্রতি ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) প্রকাশিত গণতন্ত্র সূচক ২০২৩ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য। প্রতিবেদনে ১৬৫টি স্বাধীন রাষ্ট্র ও দু’টি অঞ্চলের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’, ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’, ‘মিশ্র শাসন ব্যবস্থা’, ‘স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা’ ইত্যাদি বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে এই তালিকায়। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গণতন্ত্রের মান কমেছে বিশ্বজুড়েই। যেখানে একদম নিচে অবস্থান করছে উত্তর কোরিয়া, মিয়ানমার ও আফগানিস্তান। আর গণতন্ত্র সূচকে শীর্ষে রয়েছে যথাক্রমে নরওয়ে, নিউজিল্যান্ড ও আইসল্যান্ড। এদিকে গণতন্ত্র সূচকে গতবারের তুলনায় দুই ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১৬৭টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৭৫তম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। সূচকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের অবস্থান ৪১তম। আর শ্রীলঙ্কা আছে ৭০তম অবস্থানে। অন্যদিকে বাংলাদেশের পরে অবস্থান করছে ভূটান (৮১তম), নেপাল (৯৮তম) ও পাকিস্তান (১১৮তম)। ভারতকে রাখা হয়েছে ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’ বিভাগে। যদিও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অর্থনৈতিক বিকাশের সম্ভাবনার’ জন্য ভারতের গণতন্ত্র সূচকের সামান্য উন্নতি হয়েছে। ভারতের প্রাপ্ত নম্বর ৭ দশমিক ১৮। অন্যদিকে, চীনের অর্থনৈতিক বিকাশের কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হলেও গণতন্ত্র সূচকের তালিকায় তারা তলানির দিকেই। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ২ দশমিক ১২, তালিকায় তাদের অবস্থান ১৪৮তম। ইআইইউ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০২৩-এ বিশ্বে ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের’ সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও গণতন্ত্র সূচকের গড়ে পতন হয়েছে। ২০২২-এ গড় বিশ্বের গণতান্ত্রিক স্কোর ছিল ৫ দশমিক ২৯। কিন্তু ২০২৩-এ সেটি হয়েছে ৫ দশমিক ২৩। পশ্চিম ইউরোপ ছাড়া গোটা বিশ্বেই গণতন্ত্র সূচকের পতন হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে। গণতন্ত্র সূচকে পশ্চিম ইউরোপ উত্তর আমেরিকাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে এবার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ, উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি সব থেকে উদ্বেগজনক। যে দেশগুলোর গণতান্ত্রিক কাঠামোর উন্নতি হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে গ্রিস (আংশিক গণতন্ত্র থেকে পূর্ণ গণতন্ত্র), পাপুয়া নিউ গিনি ও প্যারাগুয়ে (মিশ্র শাসন ব্যবস্থা থেকে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র) এবং আঙ্গোলা (স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা থেকে মিশ্র শাসন ব্যবস্থা)।