পাকিস্তানে গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে আজ (শনিবার) দেশজুড়ে বিক্ষোভ করবে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। বিক্ষোভে অংশ নেবে জামায়াত-ই-ইসলামীও (জেআই)। তবে এই বিক্ষোভ ঠেকাতে দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। খবর ডনের। শনিবার এক এক্স বার্তায় ইসলামাবাদ পুলিশ বলেছে, পিটিআইয়ের দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরুর আগে ‘হাই অ্যালার্ট’-এ রয়েছেন তারা। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বিবৃতিতে পুলিশ বলেছে, এফ-৯ পার্কের কাছাকাছি ট্রাফিক বাড়তে পারে এবং জনসাধারণকে সেখানে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও জেলাজুড়ে টহল বাড়ানো হয়েছে এবং চেকপয়েন্টগুলোতে চেকিং কঠোর করা হয়েছে। এর আগে শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক দেয় পিটিআই। শুক্রবার নির্বাচনের ফলাফল কারচুপির প্রতিবাদে দেশবাসীকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পিটিআই চেয়ারম্যান গহর আলী খান। এছাড়াও একই দাবিতে প্রতিবাদে থাকা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট, জমিয়ত-উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি, জামায়াত-ই-ইসলামী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট- এনডিএমসহ অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলোকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পিটিআই। প্রসঙ্গত, জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে পিএমএল-এনের শীর্ষ নেতা শাহবাজ শরীফ ও প্রেসিডেন্ট পদে পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারিকে সমর্থন দিতে দুই দল সম্মত হয়। এর বাইরে স্পিকার ও প্রাদেশিক একাধিক মুখ্যমন্ত্রী পদে উভয় দলই নিজেদের মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। জোট সরকারের ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দুই দলই ধীরপথে এগোতে চাচ্ছে। উভয়েই চাচ্ছে সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্ষমতার চেয়ার নিজেদের দখলে রাখতে। পিপিপি জাতীয় পরিষদের স্পিকার পদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে মনোনয়ন দিয়েছে। অন্যদিকে, পিএমএল-এনও এই পদের জন্য প্রার্থী দিয়েছে। দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিগত জোট সরকারের সাবেক স্পিকার আয়াজ সাদিককে মনোনয়ন দিয়েছে পিএমএল-এন। এছাড়া সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা খুরশিদ শাহের (পিপিপি) নামও স্পিকার পদের জন্য উত্থাপিত হয়েছে। এদিকে জোট সরকার গঠনে পিপিপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইমরান খানের বৃহস্পতিবারের নির্দেশনার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছে পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। বৃহস্পতিবার বিলাওয়াল ভুট্টোর সঙ্গে দলের যোগাযোগ সমন্বয় কমিটির বৈঠকের পর পিপিপি নেতা ফয়সাল করিম কুন্দি জানান, পিটিআইয়ের জন্য পিপিপির দরজা খোলা। তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। যদিও শুক্রবার জোট সরকারের আলোচনা থেকে সরে আসার নির্দেশনা দিয়েছেন ইমরান খান। পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার সাইফ শুক্রবার বিকালে বলেছেন, ‘দলীয় প্রধানের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে বিরোধী দল হিসেবে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ পিটিআইয়ের নেত্রী মাশাল ইউসুফজাই বলেন, ২০২২ সালে যেসব রাজনৈতিক দল ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল তাদের সঙ্গে সরকার গঠন নিয়ে কোনো ধরনের জোট তারা করবেন না। ইমরান খানই এ ব্যাপারে তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে নির্বাচনে কারচুপির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত দলগুলোর সঙ্গে যুক্ত হতে বলেছেন ইমরান।