আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল রাজশাহীর বৃহত্তম জংশন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার। জংশন স্টেশনটি শহরের মাঝখানে হবার কারনে রেলপথ স্থাপনের সময় থেকে রয়েছে লেভেলক্রসিং ব্যবস্থা। এই লেভেলক্রসিং দিয়ে শুধু যান ও যানবাহন চলাচল ছাড়া লেভেলক্রসিং ও অভ্যন্তর এলাকা সার্বক্ষনিক ১৪৪ ধারার আওতাভুক্ত। কিন্তু কেউ মানে না সে আইন। জানা গেছে, ১৯৮০ সালের শুরুতে লেভেলক্রসিংয়ের দুই ধারে অস্থায়ী ভাবে দুই-চারজন হকার বসতে শুরু করে। এক পর্যায়ে স্থায়ী হয়ে যায়। এর পর শুরু হয় জায়গা দখলের মহোৎসব। সামান্য সময়ের ব্যবধানে গড়ে উঠেছে প্রায় দুইশ’ অবৈধ দোকানের বাজার। সান্তাহারের বাহিরের লোকজনকে প্রশ্নের সুরে বলতে শোনা যায় এটা কি ‘রেলপথের মধ্যে বাজার না কি বাজারের মধ্যে রেলপথ’। এই অবৈধ বাজার থেকে স্টেশন মাস্টার, রেলওয়ে থানা, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, দলীয় নেতা এবং ‘নামী-দামী সাংবাদিক’সহ নানা জনের নামে আদায় করা হয় লাখ টাকার চাঁদা। এদিকে রেলওয়ে অভ্যন্তরে পিডিবি’র বিদ্যুৎ ব্যবহার করার আইন না থাকলেও পিডিবি এলাকার দুইটি বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে অবৈধ ভাবে বাজারের ওই সব দোকানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে মাসে লাখ টাকার বাণিজ্য করে আসছেন সংযোগ গ্রহনকারিরা। পাশাপাশি অবৈধ এই বাজারের ১০/২০ বর্গ ফুট পরিসরের একেকটি দোকানের পজিশন বেচা-কেনা হয় পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকায়। এই অবৈধ বাজার গড়ে উঠার সময়ে চলাচল করতো হাতে গোনা কয়েকটি ট্রেন। বর্তমানে ট্রেন সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে অর্ধশত। একারনে মারাত্মক ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে গেছে ট্রেন চলাচল। সান্তাহার জংশন স্টেশনে প্রবেশ করা মাত্র একশ’ মিটার দুরে (উত্তর দিকে) রয়েছে রেলওয়ে লেভেলক্রসিং। মিটারগেজ, ব্রডগেজ এবং ডুয়েলগেজ সমৃদ্ধ এই লেভেলক্রসিংয়ের অভ্যন্তরে রেললাইনের উপড় ও রেললাইন ঘেঁষে রয়েছে নানা পণ্যের প্রায় দুইশ’ দোকান। পঞ্চগড়, চিলাহাটি ও লালমনিরহাট এবং ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহীর রেল রুটে আপ ও ডাউনে বর্তমানে চলচল করা ৪৮ ট্রেনের চালকরা লেভেলক্রসিং অতিক্রম করার সময় পড়েন মহাবিপাকে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রেলওয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ সান্তাহার রেলওয়ে লেভেলক্রসিং অভ্যন্তরের বাজার উচ্ছেদ করার জন্য স্টেশন মাস্টার, রেলওয়ে থানা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে চিঠি দেয়। কিন্তু এখনো উচ্ছেদ হয়নি। এবিষয়ে জানতে চাইলে স্টেশন মাস্টার (অতিরিক্ত দায়ীত্ব) হাবিবুর রহমান, রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্য মোক্তার হোসেন বলেন, এসংক্রান্ত কোন চিঠি পাওয়া যায়নি।