ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার টাকা পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করার কারণে বাংলাদেশকে বন্ধুরাষ্ট্র ব্রিকসের সদস্য পদ দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, ‘সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে। এই সরকার বড়াই করে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিল ব্রিকসের মেম্বার হবে। যারা ব্রিকসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে, আমাদের সেই বন্ধুরাষ্ট্র কেন আজকে আমাদের প্রত্যাখ্যান করেছে? বাস্তবতাকে তারা অস্বীকার করতে পারেনি। এই সরকার দুর্নীতি করে লাখ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। তারা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ফোকলা করে দিয়েছে। এ কারণে কোনো যুক্তিতে তারা বাংলাদেশকে ব্রিকসের সদস্য পদ দিতে পারেনি- এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। যেভাবে বিশ্বপরিমণ্ডল থেকে প্রত্যাখান হয়েছি আমাদের জন্য লজ্জার।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে’ অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আবদুল মঈন খান এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম-৭১ কেন্দ্রীয় কমিটি এর আয়োজন করে।
আমরা কেন বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি, প্রশ্ন রেখে ড. আবদুল মঈন খান বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। শুধুমাত্র আমরা না, গণতান্ত্রিক বিশ্ব -যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়াসহ প্রত্যেকটি দেশের মানুষ বলছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই।
তিনি আরো বলেন, এই সরকার অর্থনীতি ও কূটনীতিতেও ব্যর্থ হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার অন্ধমোহে অর্থবিত্ত বৈভব, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার, দুর্নীতি, মেগাপ্রজেক্টের নামে মেগাদুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ করেন ড. আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, এ কথাগুলো কাউকে না কাউকে বলতে হবে।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ১৮ কোটি মানুষ তো আর দেশ চালাতে পারে না। তাই তারা তিন শ’ মানুষকে দায়িত্ব দেয়। এটা কোনো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নয়; পাঁচ বছরের জন্য তাদের এই দায়িত্ব দেয়া হয়। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।
বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করেন ড. আবদুল মঈন খান। ক্ষমতাসীনদের নানা বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, গত এক বছর ধরে বাংলাদেশে কঠিন আন্দোলন করেছি, এর চেয়ে কঠিন, শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন আপনাদের (আওয়ামী লীগ) ইতিহাসে দেখাতে পারবেন না। আমরা এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। সেই কারণে আমাদের আন্দোলনও এক শ’ভাগ গণতান্ত্রিক। চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে নৈতিকভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করব।
ড. মঈন খান বলেন, জোর করে কারো কণ্ঠরোধ করা যায় না। একটা আইন ছিল দেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট; এর নাম ও খোলস পরিবর্তন করা হয়েছে। এই আইন ব্যবহার করে বিরোধী মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে চায়। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে বলে, মানুষের কণ্ঠ কেউ রোধ করতে পারিনি। মানুষ ন্যায়, সত্য, সুশাসন, স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের কথা বলবে, মানাবাধিকারের কথা বলবে- এটা কেউ রোধ করতে পারবে না। এই সরকার যে আইন বা নির্দেশ দিক তা জনগণের আন্দোলনের মুখ কুপুরের মতো উড়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম রিপন। আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।