কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম হামলার শিকার হয়েছেন। হামলার সময় হামলাকারীরা নৌকা প্রতীকের ব্যাজ পরা ছিলেন। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় ভোট চলাকালে বনানী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হিরো আলমকে মারধরের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন হিরো আলমের প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট মো. ইলিয়াস।
তিনি বলেন, হামলায় আহত একতারা প্রতীকের প্রার্থী হিরো আলমকে রামপুরার বেটার লাইফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকালে হিরো আলম বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে যান। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ঢোকার আগে স্কুলের মাঠে কয়েকজনের সঙ্গে সেলফি তোলেন এই স্বতন্ত্র প্রার্থী।
তখন হামলাকারীদের কয়েকজন এসে তাকে ঘিরে ধরে বলেন, ‘এটা টিকটক ভিডিও বানানোর জায়গা না’, ‘এটা ভোটকেন্দ্র,’ ‘এটা গুলশান-বনানী’—এই বলে হিরো আলমকে ধাওয়া শুরু করেন।
এরপর কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা হিরো আলমকে ঘিরে রেখে স্কুলের ফটকের দিকে নিয়ে যান। স্কুলের প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়ার পর হিরো আলমের পাশে পুলিশ সদস্যরা ছিলেন না। তখনো পিছু নেন হামলাকারীরা।
এ সময় মারধর থেকে বাঁচতে হিরো আলম দৌড়ে পালান। হামলাকারীরা তাকে পেছন থেকে ধাওয়া দেন। তাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। এরপর তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়।একপর্যায়ে হিরো আলম বনানীর ২৩ নম্বর সড়কে গিয়ে একটি রিকশায় ওঠেন। পরে গাড়িতে করে চলে যান।
ভিডিওতে দেখা গেছে, হিরো আলমকে কেন্দ্র থেকে ধাওয়া দিয়ে বের করে নেওয়ার সময় পাশেই পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাকে রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এগিয়ে আসেনি।
একপর্যায়ে হামলাকারীরা তাকে মারতে মারতে সেখান থেকে কিছুদূর পর্যন্ত নিয়ে যান। এরপর তাকে রাস্তায় ফেলে তাকে লাথি ও কিলঘুষি মারা হয়। নৌকার ব্যাজ পরা হামলাকারীদের কয়েকজনের হাতে লাঠিসোঁটাও ছিল।
মারধরের মুখে দৌড়ে পালান হিরো আলম।এসময় আশপাশে সবাই মারধরের দৃশ্য ভিডিও করলেও তাকে রক্ষায় কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।
একপর্যায়ে নিজেকে বাঁচাতে খোঁড়াতে খোঁড়াতে দৌড়াতে থাকেন হিরো আলম। কিছু দূর যাওয়ার পর তিনি একটি রিকশায় উঠেন। এসময় দুজন তাকে সহযোগিতা করেন।এরপর রিকশা থেকে নেমে আবার তিনি দৌড়াতে শুরু করেন। পরে হিরো আলম একটি গাড়িতে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
বনানী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বনানীর বিদ্যানিকেতেন কেন্দ্রে কিছু ইউটিউবার নিয়ে ঢোকেন হিরো আলম। সেখানে বাধা পেয়ে তিনি কেন্দ্রের বাইরে এলে সেখানকার লোকজনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি বাধে। একপর্যায়ে বহিরাগতরা তাকে ধাওয়া করে।
এ বিষয়ে ঢাকার অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, হিরো আলমের ওপর হামলা হয়েছে-এ ধরনের একটা বিষয় আমরা শুনেছি। তবে এখনও এ বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান বলেন, ভোট শেষ হওয়ার ৫-১০ মিনিট আগে বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রের বাইরে রাস্তার ওপর হামলার খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রকৃত ঘটনা কী ঘটেছে- তা জানতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খতিয়ে দেখে পরবর্তী করণীয় জানানো সম্ভব হবে।