২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ঘাটতি ধরে আগামী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম (বাজেট) অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমোদনক্রমে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। এটি দেশের ৫২তম এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ২৪তম বাজেট। আর অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের এটি পঞ্চম বাজেট।প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ১০ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে অনুদান ব্যতীত মোট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তব্যে বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। এখানে উল্লেখ্য, এ হার গত বাজেটে ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।’ ঘাটতির অর্থায়ন প্রসঙ্গে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে মোট ঘাটতির মধ্যে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস হতে এবং ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস হতে নির্বাহ করার জন্য প্রস্তাব পেশ করছি।’ অর্থমন্ত্রী অভ্যন্তরীণ উৎস হতে যে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা সংগ্রহের কথা বলেছেন তার মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা হতে সংগৃহীত হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা।
এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। গতবছর অর্থমন্ত্রী চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছিলেন। তবে সংশোধিত হয়ে এই বাজেটের আকার কমে দাঁড়ায় ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেটের আকার বাড়ছে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ১০ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড উৎস হতে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে। এনবিআর বহির্ভূত সূত্র থেকে কর রাজস্ব প্রাক্কলন করা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। কর-বহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আহরিত হবে আরও ৫০ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে অনুদান ব্যতীত মোট ঘাটতি নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপি ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। বৈদেশিক উৎস (অনুদানসহ) থেকে আসবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা হতে সংগৃহীত হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার পরিচালন ব্যয়ের প্রাক্কলন করেছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া উন্নয়ন ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।