বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ওবায়দুল কাদেরের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘ওদের এক নেতা এক এগারোর সময় জেলে আমার সামনে কান ধরে উঠবস করেছিলেন। বলেছিলেন, আর রাজনীতি করবো না ভাই। আজ সেই নেতা বড় বড় কথা বলেন। তিনি বলেন, খেলা হবে। আমরা আপনাদের এইসব খেলায় অংশগ্রহণ করবো না। খেলা তো শুরু হয়ে গেছে। আমরা আপনাদের সাথে কোনো ঝামেলায় যেতে চাই না।’ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির জনসমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, দেশকে রক্ষা করতে হলে এই লুটেরা সরকারকে বিদায় করতে হবে। এদের বিদায় না করলে উন্নয়ন হবে না। মানুষের পেটে ক্ষুধা রেখে দুটো ব্রিজ করলে উন্নয়ন হয় না। আগে পেটের ভাত, তারপর উন্নয়ন। যে উন্নয়নের চেয়ে বেশি নিজের পকেটের উন্নয়ন হয় সেই উন্নয়ন আমাদের প্রয়োজন নেই।
মির্জা আব্বাস বলেন, ওরা সিন্ডিকেট করে জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে। আমি বলিনি, এটা শিল্পমন্ত্রী বলেছে। দেশের জনগণ এই লুটপাটের কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। আমরা বারবার প্রতিবাদ করেছি। সরকারের বোধদয় হয়নি।
তিনি বলেন, ব্রিজ করতে বাইরে লাগে ছয়-সাত হাজার ডলার। আমার দেশে লাগে ৩০ হাজার ডলার। এটা কি মগের মুল্লুক নাকি। সরকারি কর্মকর্তারা একে-অপরের বিরুদ্ধে লেগে আছে। এ বলে তুই বেশি খেয়েছিস ও বলে তুই বেশি খেয়েছিস। পানির দাম, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। ওরা বলে তেলের দাম বাড়াবো না আন্তর্জাতিক বাজারের দামে ছেড়ে দেব। এতদিনে কেন? আমার নেত্রী কি দেশ চালায়নি ভর্তুকি দেয়নি। তখন কি দাম বেড়েছিল? বাড়েনি।
তিনি আরো বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপনাদের আন্দোলনের সম্মান জানিয়ে সেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিল। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া চাইলে আজ পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। আর আপনারা কী করলেন। শত শত মানুষকে গুম করলেন, হত্যা করলেন। এভাবে একটা দেশ কখনো চলতে পারে না।
মির্জা আব্বাস বলেন, এখনো সময় আছে মানুষের মুখের ভাষা বুঝতে চেষ্টা করুন। নয়ত পরে পালানোর রাস্তা খুঁজে পাবেন না। জনগণ আপনাদের বিচারের পাল্লায় তুলবে। জনগণ আপনাদের ছাড়বে না। যারা গুম হয়েছে তাদের বাবা-মা আপনাদের ছেড়ে কথা বলবে না। নারায়ণগঞ্জের অনেক নেতা কারাগারে আছে। আমরা জেল থেকে তাদের মুক্ত করবো। এ সরকারের কাছে আর মুক্তি চাই না আমরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, কাজী মনিরুজ্জামান, জেলা সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন, যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান ভুইয়া, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, মহানগর যুবদলের আহবায়ক মমতাজউদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল প্রমুখ।