নতুন পাঠ্যপুস্তকে কোনো বিষয় বা ছবি নিয়ে যৌক্তিক আপত্তি বা অস্বস্তি থাকলে প্রয়োজনে সংশোধন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আশুলিয়ার খাগানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দশম সমাবর্তনে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচারে কান না দিয়ে সত্যতা যাচাইয়ের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কথা বলছিলাম, সেজন্য শিক্ষার্থীদের যদি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এনে তৈরি করতে হয়, তাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।
নতুন বই নিয়ে সমালোচনা সম্পর্কে তিনি বলেন, সত্যের সাথে মিথ্যাকে মেশাবে না। যারা মিথ্যাচার করছে, তারা অপপ্রচার করছে। কুরআনে গুজব রটনোর ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। মন্দ কাজের জবাব ভালো কাজ দিয়ে দিতে বলা হয়েছে। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। যারা মন্দ কাজ করছে, যাদের উদ্দেশ্য মন্দ, তাদের জন্য আমরা নিশ্চয় থেমে থাকব না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সমাজে যে বিষয়ে সংবেদনশীলতা থাকবে, সেটিকে বিবেচনায় নিয়েই আমরা ব্যবস্থা নেব। যেখানে সংশোধন দরকার, সাথে সাথেই সংশোধন করব। কিন্তু মিথ্যাচার ও অপপ্রচার দিয়ে আমাদের অগ্রযাত্রা কখনো থামানো যাবে না। গুজবে কান দেবেন না। বই নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। অথচ বইগুলো না পড়ে ও না দেখেই মন্তব্য করা হচ্ছে। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও মহান সংসদে দাঁড়িয়ে এই মিথ্যাচারে অংশ নিচ্ছেন। এটা খুব দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।
তিনি বলেন, এই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারো সাথে শেয়ার করার আগে সত্যটা যাচাই করে নিন। বইগুলো ওয়েবসাইটে আছে। পাশের স্কুলে আছে। বইগুলো দেখে নিন।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, যে বিষয় বইয়ে নেই, যে ছবি বইয়ে নেই, সে বিষয় ও ছবি নিয়ে মিথ্যাচার করে, ফটোশপ করে আমাদের বইয়ের অংশ বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষক, লেখক, বিশেষজ্ঞ ও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলদেরও অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যারা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য যদি সৎ হতো, তাদের উদ্দেশ্য যদি হতো- বইগুলোর সংশোধন করা, তাহলে নিশ্চয়ই তারা মিথ্যার আশ্রয় নিতো না। এরাই তারা যারা নব্বইয়ের দশকে বলেছিল, নৌকায় ভোট দিলে ফেনী পর্যন্ত ভারতের অংশ হয়ে যাবে। আর এরাই নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। যেখানে বইয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, মানুষ বানর থেকে হয়নি, সেখানে তারা মিথ্যাচার করে কিভাবে বলে- বানর থেকে মানুষ।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন ভারতের হিমাচল প্রদেশের শোলিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর অতুল খোসানা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো: সবুর খান। আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান।
উল্লেখ্য, এবারের সমাবর্তনে ছয় হাজার ১৬৪ জন গ্রাজুয়েটকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী ১২ জন গ্রাজুয়েটকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ‘স্বর্ণপদক’ প্রদান করেন।