নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডোমারে নিজের স্ত্রী ও আড়াই বছরের কন্যা সন্তানকে ধারালো ছুরি দিয়ে হত্যার পর নিজের পেটে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন জিয়ারুল ইসলাম (৩০) নামে এক ব্যক্তি। বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নিমোজখানার হরতকিতলা নামকস্থানে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে তার ১ মাস বয়সী শিশু সন্তান ইয়াছিন, তার শাশুড়ি বিলকিস বেগম ও ঘাতক জিয়ারুল নিজেই। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত তিনজনকে উদ্ধার করে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিহতরা হলেন- জিয়ারুলের স্ত্রী রতœা বেগম (২৫) ও আড়াই বছর বয়সী মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার। ঘাতক জিয়ারুল ইসলাম উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের চান্দিনাপাড়া এলাকার সুমারু মামুদের ছেলে। সে তার শ্বশুরবাড়ি নিমোজ খানার হরতকী তলায় ৪ বছর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দুপুরে স্বামী জিয়ারুলের সাথে তার স্ত্রী রতœা বেগমের পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া লাগে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে জিয়ারুলের স্ত্রী রতœা বেগম তার আড়াই বছরের কন্যা সন্তান ইয়াছমিনকে নিয়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে চলে আসেন। এ সময় রতœা বেগমের মা বিলকিস বেগমও তার এক মাস বয়সী নাতীকে কোলে নিয়ে বাড়ির বাইরে হরতকি তলার রাস্তায় আসেন। জিয়াররুল বাড়ি থেকে ধারালো ছুরি নিয়ে তার শাশুড়ির কোলে থাকা শিশু সন্তানকে আঘাত করে জমি বাড়িতে ফেলে দেন। এ সময় তার শাশুড়ি শিশুটিকে আনার জন্য এগিয়ে গেলে জিয়ারুল ছুরি দিয়ে তার শাশুড়িকে কোপাতে থাকেন। শাশুড়ির বা গালে ও পিঠে ছুরির কোপ লাগে। তার শাশুড়ি দৌড়ি জমিতে নেমে বাচ্চাটিকে পানির ভিতর থেকে উদ্ধার করেন। এ সময় জিয়ারুলের হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে সে তার আড়াই বছর বয়সী মেয়ের পেটের ভিতরে ছুরি ঢুকায় দিয়ে তার নারী-ভুড়ি বের করে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সেই ছুরি দিয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করেন। স্ত্রীকে হত্যার পর জিয়ারুল ইসলাম ছুরিটি তার পেটে ঢুকায় আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তবে ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে আছেন। তার পেটের নারী-ভুরি বের হয়ে রাস্তায় পড়ে তিনি কাতরাতে থাকেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত বিলকিস বেগম তার নাতি ইয়াছিন ও ঘাতক জিয়ারুলকে উদ্ধারকে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় হরতকী তলার রাস্তার এক ধারে মা রতœা বেগম ও নারী-ভুরি বের হয়ে হয়ে মেয়ের লাশ পড়ে রয়েছেন। পাশেই শিশু সস্তানকে কোলে নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছেন নিহত রতœার মা বিলকিস বেগম। রাস্তার মাঝখানে পড়ে রয়েছেন ঘাতক জিয়ারুল। এ সময় তার পেটের নারী-ভুড়ি বের হয়ে তিনিও কাঁতরাচ্ছেন। মা ও মেয়ে হত্যার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে আশে পাশের হাজার হাজার নারী-পুরুষ এক নজর মা ও মেয়ের লাশটি দেখার জন্য ভিড় জমায়। তথ্যটি নিশ্চিত করে ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদ উন নবী জানান, স্ত্রী ও সস্তানকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা করলে বেঁচে যায়। আহত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।