চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাইয়ে মহানগর প্রভাতী ট্রেনের ধাক্কায় পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে মিসরাই বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তবে নিহতরা সবাই পর্যটক বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ারসার্ভিস। জানা গেছে, খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখে পর্যটকদের নিয়ে ফেরার সময় মাইক্রোবাসটির সাথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা মহানগর প্রভাতী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী একটি ট্রেনের সাথে ধাক্কা খায় মাইক্রোবাসটি। এতে ঘটনাস্থলে ১১ জন মারা যান। হতাহতদের বাড়ি হাটহাজারীর আমানবাজার এলাকায় বলে জানা গেছে। পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের ১১ জন যাত্রী নিহতের ঘটনায় ৯ জনের পরিচয় মিলেছে। তারা সবাই হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজার এলাকার ‘আর এ- জে’ নামক একটি কোচিং সেন্টারের ছাত্র-শিক্ষক। ১১ জনই ঘটনাস্থলে মারা যান। নিহতরা হলেন, কোচিং সেন্টারের চার শিক্ষক জিসান, সজীব, রাকিব ও রেদোয়ান। এ ছাড়া কেএস নজুমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশাম, আয়াত, মারুফ, তাসফির ও হাসান। আহত ছয়জন হলেন মাইক্রোবাসের হেলপার তৌকিদ ইবনে শাওন (২০), একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো: মাহিম (১৮), তানভীর হাসান হৃদয় (১৮), মো: ইমন (১৯), এসএসসি পরীক্ষার্থী তছমির পাবেল (১৬) ও মো: সৈকত (১৮)। জানা গেছে, নিহত ও আহত সকলের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজার খন্দকিয়ায়। শুক্রবার এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে কোচিং সেন্টারের চার শিক্ষক জিসান, সজীব, রাকিব ও রেদোয়ান মিরসরাইয়ে খৈয়াছড়া পানির ঝর্ণা দেখতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে দুপুরে ট্রেনের ধাক্কায় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শহিদুল আলম বলেন, ‘আর এ- জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও ছাত্ররা সেখানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। গাড়িতে কোচিং সেন্টারের চারজন শিক্ষক ছিল। বাকিরা শিক্ষার্থী।’ নিহত এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশামের বন্ধু সাজিদ বলেন, ‘আমারও ওদের সাথে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজকে এলাকায় একটা ফুটবল টুর্নামেন্ট থাকায় আমি আর যাই নাই। আমি আমার বন্ধুদের হারিয়ে ফেললাম।’ ‘আর ওদের দেখতে পাবো না’ বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।মাইক্রোবাস চালকের ভুলে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো: জাহাঙ্গীর হোসেন।তিনি বলেন, ‘আমাদের রেলওয়ের নিযুক্ত গেটম্যানও ছিল সেখানে। এ ঘটনার পরপর গেটকিপারের সাথে কথা বলেছি। গেটকিপার বলেছে, মাইক্রোবাসের চালক গেটবারটি জোর করে তুলে রেললাইনে ঢুকে পড়ে। এর পর মহানগর প্রভাতী ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়।’