সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তামাই খন্দকার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয় ১৯১৯ সালে। বর্তমান বিদ্যালয়টি শতবর্ষ অতিক্রম করলেও হয়নি অবকাঠামো উন্নয়ন। ভাঙ্গা, জরাজীর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতনে ভবনে চলছে পাঠদান।
ভবনের তিনটি রুমে রয়েছে, একটি রুমে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করেন। বাকী একটি রুমে শিফট ভাগ করে চলে পাঠদান অপর আরেকটি রুম পরিত্যক্ত, ক্লাস করানোর অনুপযোগী। পাশে সরকারি অনুদান ও বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে ছোট টিনের ঘর তৈরি করে চলছে অস্থায়ী পাঠদান। সরকার প্রাথমিক শিক্ষার মান ও অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একাধিক বহুতল ভবনসহ, ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম,পাঠাগার তৈরি করছে। কিন্তু এই বিদ্যালয়ে কোনো অবকাঠামো উন্নয়ন তো দূরের কথা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নেই শ্রেণি কক্ষ, পাঠদানে রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকি। সরেজমিনে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯১৯ সালে স্থাপিত হয় এবং তিন কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবন নির্মাণ করা হয় ২০০৫ সালে। অবকাঠামো নির্মাণে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার ও নির্মাণ ক্রুটি হওয়ায় মাত্র ১৭ বছরেই ভবনটি পরিত্যক্ত/ব্যবহার অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়েছে। বিম ও কলামে ফাটল ধরেছে, ছাদের ঢালাই ও প্লাস্টার খসে পরছে। গত ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়টি উপজেলার এলজিইডির সার্ভেয়ার,পরিদর্শন করে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে প্রতিবেদন দিয়েছে। স্কুলের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলকে এ বিষয়ে অবহিত করলে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেন। এখনও পর্যন্ত বিদ্যালয়ে সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম ও চতুর্থ শ্রেণির লিমা, আয়রিন খাতুন বলেন, আমরা স্কুলে ক্লাস করতে পারি না, বিল্ডিং ভেঙ্গে মাথার উপর খোয়া,বালু পড়ে। আমাদের স্কুলে সুন্দর ভাবে ক্লাস করতে নতুন বিল্ডিং প্রয়োজন। তামাই খন্দকার পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, শ্রী দেবব্রত প্রামাণিক বলেন, বিদ্যালয়টি শতবর্ষ অতিক্রম করেছে। বিদ্যালয়ে ১৮২ জন শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষক রয়েছে। ২০০৫ সালে পাকা ভবন নির্মাণে ক্রুটি হওয়ায় বিদ্যালয়ে ভাঙ্গণ ও ফাটল ধরেছে যা ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণীকক্ষের অভাবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের নিবেদন, বিদ্যালয়ে একাডেমিক নতুন ভবন নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, খন্দকার আশরাফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়টি অযত্নে অবহেলায় রয়েছে। দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে কোনো অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। পুরোনো একটি জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। ঝড়, বৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো যায় না। অনতিবিলম্বে বিদ্যালয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ অতিব জরুরি। এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ফজলুর রহমান বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে, নিলামের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়কে অবহিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন ভবনের জন্য প্রয়োজন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।