পাগলা ঘোড়ার মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে নাগালের বাইরে ভোজ্যতেলের দাম। বোতলজাত সয়াবিন বাজার থেকে প্রায় উধাও। এমন অবস্থায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের দোকানে দেখা গেল বোতলজাত সয়াবিন তেল বেঁধে রাখা হয়েছে শেকলে। রাসেল স্টোর নামের ওই দোকানদার রাসেল মিয়া প্রতিবেদককে জানালেন, তেলের দাম বাড়ার মধ্যে তাদের মধ্যে দোকান থেকে সয়াবিন চুরির ভয় ঢুকেছে। আর এমন ভয় থেকেই সয়াবিনের বোতল শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। রাসেল মিয়া বলেন, ‘এখন তেলের যে দাম, এই মুহুর্তে যদি একটি বোতল হারিয়ে যায় বা কেউ নিয়ে যায় তাহলে লোকসান হবে। তাই চাই না একটি বোতলও হারাক। এখন তো শুধু শেকল দিয়া বাঁধছি, দুইদিন পর রড দিয়া বাঁধা লাগব।’ কথায় কথায় রাসেল মিয়া তথ্য দিলেন, এক ভিক্ষুক কিছুদিন আগে তার দোকানে টিসিবির তেল বিক্রি করতে আসেন। পাঁচ লিটারের বোতল সাতশ টাকা করে বিক্রি করতে চাইল। এমন বোতল নাকি তার কাছেই আছে ৪০ বোতল! রাসেল মিয়া বলেন, ‘ওই ভিক্ষুকের কাছে তেলের এত সংগ্রহ আছে আমার তো চোখ কপালে উঠে গেছে। একজন ভিক্ষুকের কাছেই যদি এত পরিমাণ তেল থাকে তাহলে দাম তো বাড়বেই। পরে আমি তাকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।’ কারওয়ান বাজারে ব্যবসা করে আসছেন বাবুল শেখ। বিসমিল্লাহ স্টোরের মালিক বাবুল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কোম্পানি থেকে তেল প্রতিদিন আসে না। যেই কারণে ক্রেতাদেরও চাহিদা মেটাতে পারি না। কোনো কোনো ২/৩ কার্টন তেল আসে, তাই বিক্রি করি।’ বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মোহাম্মদ ইমদাদুল হক ইমু জানালেন, তিনি দুই লিটার ওজনের দুইটা বোতল কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দোকান ঘুরে এই মাপের মাত্র একটি বোতল পেয়েছেন। ইমদাদুল হক ইমু বলেন, ‘আমি ২ লিটারের দুইটা বোতল নিতে চেয়েছি, কিন্তু দোকানে বিক্রি করে না। আবার দেখলাম কেউ কেউ কার্টন পর্যন্ত কিনে নিয়ে গেছে। আসলে তেলের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমরা জনগণের দোষটাই বেশি।’ বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৫ লিটারের সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়, ২ লিটারের সয়াবিন তেল ৩৩৫ টাকায়, পাকিস্তানি কক মুরগি কেজিপ্রতি ৩০০ টাকায়, আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা প্রতি কেজি।