ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) বগুড়ার শেরপুর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের ভাষ্য, নির্বাচনে কেন্দ্র দখল, ব্যাপক প্রভাব বিস্তার, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, প্রচুর জালভোট প্রদানসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। তারা বলেছেন, এসব অনিয়ম সত্ত্বেও অর্ধেক ইউপিতেও জিততে পারেনি আ’লীগ। এ দু’উপজেলায় মোট ২০টি ইউনিয়নের মধ্যে একটির ফলাফল স্থগিত রেখে বাকি ১৯টির ফলাফল রাতে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত ১৯টির বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ৯ জন, বিএনপির স্থানীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ৩ জন, আ’লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ৪ জন, জামায়াতের একজন ও অপর একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। স্থগিত শিবগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর ইউপিতে বিএনপি নেতা আব্দুল মোত্তালিব এগিয়ে রয়েছেন। একটি কেন্দ্রে গোলযোগের কারণে ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। এই কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণ করা হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। শিবগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি দলীয় প্রার্থী দিলেও তাদের কেউ জয়লাভ করেননি। এমনকি সম্মানজনক ভোটও পাননি তারা। জেলা জাপার আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ ওই উপজেলা নিয়ে গঠিত বগুড়া-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য।
শেরপুর: শেরপুর উপজেলার ৯টি ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ৪ জন, স্বতন্ত্র (বিএনপি) ৩ জন, স্বতন্ত্র (জামায়াত) ১ জন ও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত একজন বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
বিজয়ীরা হলেন – খামারকান্দি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের আব্দুল মোমিন মহসিন (নৌকা), কুসুম্বী ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ আলম পান্না (স্বতন্ত্র, বিএনপি), সুঘাট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনিরুজ্জামান জিন্নাহ (নৌকা), সীমাবাড়ী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের গৌরদাস রায় চৌধুরী (নৌকা), ভবানীপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের এসএম আবুল কালাম আজাদ (নৌকা), বিশালপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী জাকির হোসেন, মির্জাপুর ইউনিয়নে জাহিদুল ইসলাম (স্বতন্ত্র, বিএনপি), খানপুর ইউনিয়নে পিয়ার হোসেন পিয়ার (স্বতন্ত্র, বিএনপি) ও শাহবন্দেগী ইউনিয়নে কাজী আবুল কালাম আজাদ (স্বতন্ত্র, জামায়াত) ।
শিবগঞ্জ: শিবগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষে রাতে ১০টির ফলাফল ঘোষণা করেছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। এর মধ্যে নৌকা ৫টি, স্বতন্ত্র ১টি, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ৩ জন জয়লাভ করেছেন।
সে ফলাফলে নির্বাচিতরা তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত কিচক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের এবিএম শাহজাহান চৌধুরী (নৌকা), বিহার ইউনিয়নে মহিদুল ইসলাম (নৌকা), বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নে রেজাউল করিম চঞ্চল (নৌকা), দেউলী ইউনিয়নে জাহিদুল ইসলাম টাকো (নৌকা), শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নে শহিদ ইসলাম শহিদ (নৌকা), আটমূল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র ) বেলাল হোসেন, ময়দানহাট্টা ইউনিয়নে আবু জাফর (স্বতন্ত্র), পিরব ইউনিয়নে আসিফ মাহমুদ মিলটন (স্বতন্ত্র), রায়নগর ইউনিয়নে শফিকুল ইসলাম শফি (স্বতন্ত্র) ও মাঝিহট্ট ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী এসকেন্দার আলী সাহানা। অপরদিকে সৈয়দপুর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গোলযোগ হয়েছে। সেখানে ফলাফল ঘোষণার দাবিতে বগুড়া-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ, কেন্দ্রে হামলা, পুলিশের টিয়ারশেল রাবার বুলেট নিক্ষেপের পর ফলাফল স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ওই ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে এগিয়ে রয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোত্তালিব। গোলযোগপূর্ণ কেন্দ্রে নতুন করে ভোটগ্রহণ করা হবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।