ঢাকা : র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এডিজি অপারেশনস্) কর্নেল কে এম আজাদ বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশে কিশোর গ্যাংয়ের অস্বিত্ব থাকবে না। কিশোর গ্যাং দমনে র্যাব বস্তুনিষ্ঠ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার কিশোর অপরাধ দমনে সামাজিক প্রচারণার অংশ হিসেবে র্যাব নির্মিত একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপন বা টিভিসির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
‘সবার হোক একটাই পণ কিশোর অপরাধ করবো দমন’ শিরোনামের টিভিসির উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
র্যাব এডিজি কে এম আজাদ বলেন, বর্তমান ডিজিটাল যুগে তথ্যের অবাধ প্রবাহ রয়েছে। এরমধ্যে আছে ভালো-মন্দ দুটোই। আমাদের সবাইকে ভালো বেছে নিতে হবে, আর মন্দকে দূরে রাখতে হবে। আজকে আমরা যে কিশোর গ্যাং বলছি, এটা আমাদের নয়। আমাদের কিশোররা বিদেশি কিছু অপসংস্কৃতি অনুসরণ করছে মাত্র। যা আমাদের পরিবার, সমাজ, শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে কিছু কিছু দুর্বলতার কারণে এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কর্নেল আজাদ বলেন, ২০১৭ সালে রাজধানীর উত্তরায় আদনান নামে এক কিশোরকে হত্যার মাধ্যমে কিশোর গ্যাং অপসংস্কৃতি আলোচনায় আসে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে মূলহোতাসহ বেশ অনেকজনকেই আইনের আওতায় এনেছে র্যাব। পরবর্তীতে উত্তরা, গাজীপুরসহ আরো বেশ কয়েকটি স্কুলের ছাত্র যেমন হৃদয়, শুভসহ আরও কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। ‘কিশোর গ্যাং’ নামে অপসংস্কৃতি রোধে গ্যাং কালচারের সঙ্গে জড়িত অনেককে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। এতে গ্যাং কালচার অনুসরণ করা কিশোররা নিস্কৃয় আছে। তবে এটাকে এই মুহুর্তে শেষ বলা যায় না। কিশোর গ্যাং দমনে র্যাব বস্তুনিষ্ঠ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাচ্ছি, অভিযানিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি জনসচেতনা এবং বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সকলকে সম্পৃক্ত করতে চাচ্ছি। এই স্বাধীন বাংলাদেশে কিশোর গ্যাংয়ের অতিত্ব থাকবে না।
র্যাব এডিজি বলেন, কিশোর গ্যাং বন্ধে সারাদেশে র্যাবের সকল ব্যাটেলিয়ন অনেকগুলো অভিযান করেছে এবং বর্তমানে অব্যাহৃত আছে। মার্চ থেকে এই পর্যন্ত ২৩৪ জনকে র্যাব বিভিন্নভাবে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। আমরা সকলকে কিন্তু আইনের আওতায় আনিনি, অনেককে বুঝিয়ে তাদের পিতা-মাতা বা শিক্ষকদের কাছে দিয়েছি। পশ্চিমা এই কালচার অনুসরণ করতে গিয়ে আমাদের কিশোররা দলভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপে হিংসা-বিদ্বেশ, চাঁদাবাজি, কোন্দলে জড়িয়েছে। এতে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে গ্যাং কালচার ঢাকা কেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে জেলা বা বিভাগীয় শহরে এর স্পর্শ কিংবা সহিংসতা দেখছি।
র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।