স্পোর্টস ডেস্ক: প্রথমবারের মত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। কিউইদের ৬ উইকেটে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে জিতে গেল টাইগাররা।
শুরুতে ব্যাট করে নাসুম-মোস্তাফিজের বোলিং তোপে ৯৩ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারী নিউজিল্যান্ড। জবাবে মাহমুদউল্লাহর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৫ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর ফেলে বাংলাদেশ। এতে টানা তিন সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়লো টিম টাইগার। এর আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-১ ও জিম্বাবুয়ের মাটিতে তাদের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ।
৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারটা দেখেশুনে খেলেন নাঈম-লিটন। দ্বিতীয় ওভার থেকেই অস্বস্তি দেখা যায় লিটনের ব্যাটে। পরের ওভারে আর টিকতে পারেননি তিনি। ম্যাকনকির বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অ্যালেনের তালুবন্দী হন। ১১ বল খেলে ৬ রান করেন লিটন। চলমান সিরিজে ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি লিটন। চার ম্যাচ মিলে লিটনের ঝুলিতে মাত্র ৫৫ রান। সর্বোচ্চ ৩৩ তুলেছিলেন দ্বিতীয় ম্যাচে।
গত ম্যাচে এক এজাজ প্যাটেলেই সর্বনাশ হয়েছিল বাংলাদেশের। ৪ উইকেট নিয়ে একাই গুড়িয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। আজকের ম্যাচেও বাংলাদেশের যম হয়ে এসেছিল প্যাটেল। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ২ রানের বিনিময়ে সাকিব-মুশফিককে তুলে নেন কিউই এই স্পিনার। সাকিব ফিরেন ৮ রানে ও খালি হাতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মুশফিক।
সাকিব-মুশফিককে দ্রুত হারিয়ে নাঈমকে নিয়ে এগিয়ে যান মাহমুউল্লাহ। কিন্তু দলীয় ৬৭ রানে রান আউটে কাটা পড়েন নাঈম। এতে ভাঙলো দুজনের ৩৪ রানের জুটি। ৩৫ বলে ২৯ করেন নাঈম।
নাঈমকে হারিয়ে আফিফকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ ওভারে জয় থেকে মাত্র দুই রান দূরে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম বলেই ম্যাকনকিকে বাউন্ডারি মেরে ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। এতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
এর আগে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই নাসুমের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়কের আস্থার মর্যাদা দিয়ে ইনিংসের চতুর্থ বলেই কিউই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে ফেরান নাসুম। তার ঘূর্ণিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাইফউদ্দিনের তালুবন্দী হন রাচিন। ৫ বল খেলে খালি হাতেই ফেরেন তিনি।
কিউই শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন নাসুম। আগের ওভারে রিভার্স সুইপে ছক্কা পান ফিন অ্যালেন। নাসুমের ওভারে লোভ সামলাতে পারেননি। তার দুর্দান্ত ঘূর্ণিতেও রিভার্স করতে চেয়েছিলেন তিনি, ফলাফল পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে আউট। ৮ বলে ১২ রান করে আউট ফিন।
দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে দলকে টেনে তুলছিল ল্যাথাম-ইয়াং জুটি। ১১তম ওভারে মেহেদীর বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন ল্যাথাম। ২৬ বলে ২১ রান করেন ল্যাথাম।
এরপর বাংলাদেশের স্পিনে দিশেহারা হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। টানা দুই বলে দুই উইকেট নেন নাসুম আহমেদ। দুর্দান্ত এক স্পিনে হেনরি নিকোলসকে বোল্ড করেন তিনি। এরপরের বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান গ্রান্ডহোমকে।
নিউজিল্যান্ডের দলীয় ৭২ রানে দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে ব্ল্যান্ডেলকে বিভ্রান্ত করেন মোস্তাফিজ। ১০ বলে ৪ রান করেন তিনি। ওভারের শেষ বলে নিজেই ফিরতি ক্যাচ নিলেন ম্যাকনকির। ৩ বল খেলে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।
ইনিংসের ১৪তম ওভারে বল ধরতে গিয়ে আঙুলে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছেড়ে যান সাইফউদ্দিন। চোট থেকে ফিরেই এজাজ প্যাটেলকে বোল্ড করেন তিনি। শেষ ওভারে এসে ফের জোড়া আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। আর তাতেই ৯৩ রানে অলআউট নিউজিল্যান্ড। সিরিজ জিততে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ছিল ৯৪ রানের।
সিরিজ জিততে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ছিল ৯৪ রানের। মাহমুদউল্লাহর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৫ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।