1. nobinbogra@gmail.com : Md. Nobirul Islam (Nobin) : Md. Nobirul Islam (Nobin)
  2. bd.momin95@gmail.com : sojibmomin :
  3. bd.momin00@gmail.com : Abdullah Momin : Abdullah Momin
  4. bd.momin@gmail.com : Uttarkon2 : Uttar kon
বজ্রপাত প্রতিরোধক খাদ্য ও পুষ্টির উৎস-গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও চিরচেনা তালগাছ এখন বিলুপ্তির পথে - Uttarkon
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
সরকারের জনসমর্থন শূন্যের কোঠায় : গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রতিটি মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল করতে সরকার কাজ করছে : প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য মনোনীত মার্কিন বিশেষ রাষ্ট্রদূত মিল আগে যেসব দায়িত্ব পালন করেছেন আদমদীঘিতে পুরোদমে চলছে ধান মাড়াই ॥ ব্যস্ত কৃষকরা রাজশাহীতে কোরবানিযোগ্য পশু সাড়ে ৪ লাখের বেশি, দাম চড়া হবে পাড়ায় পাড়ায় ফুটবল খেলার আয়োজন খুবই জরুরি- সাংবাদিক করিম ভরিতে সাড়ে ৪ হাজার টাকা বাড়ল সোনার দাম মহামারী মোকাবেলায় উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃত্ব অপরিহার্য : প্রধানমন্ত্রী জনগণকে বাদ দিয়ে পাতানো উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে : রিজভী দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে চারটি ঘাটতি রয়েছে : ড. দেবপ্রিয়

বজ্রপাত প্রতিরোধক খাদ্য ও পুষ্টির উৎস-গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও চিরচেনা তালগাছ এখন বিলুপ্তির পথে

  • সম্পাদনার সময় : বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৪১ বার প্রদশিত হয়েছে

 

উজ্জল হোসেন আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে-তাল গাছ সম্পর্কেএমন ভাবে আর কে-ই বা ভেবেছেন রবীন্দ্রনাথ ছাড়া? গ্রাম বাংলার অতিচিরচেনা ফল তাল।আকাশ পানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি তালগাছ আর গাছে-গাছে ধরাতালফল ও বাবুই পাখির ঝুলন্ত বাসা কতনা মনোহর এবং পাখির কলতান কার না ভালো লাগে। তালেরআদি নিবাস আফ্রিকা হলেও বাংলাদেশের সকল স্থানে ছোট বড় কম বেশী তালগাছ এখনও চোখেপড়ে। এমন এক অকৃত্রিম দৃশ্য সত্যিই মানুষের মন ভোলানো দৃশ্য বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলারসান্তহার সাইলো রোড। এমন মাটি ও গাছ-পালার দৃশ্য দেখলে সকলের হৃদয়কে নাড়া দেবেই।মনমুগ্ধকর তালগাছের এমন দৃশ্য দেখে খান মুহম্মদ মঈনুদ্দিন এর সেই কবিতার কথায় মনেকরিয়ে দেয়- ‘ঐ দেখা যায় তালগাছ ঐ আমাদের গাঁ, ঐ খানেতে বাস করে কানা বগীর ছা।’ তালের চারা রোপন করে তা থেকে ফল ও সারবান কাঠ আমাদের সব সময় কাজে লাগে। বর্তমানে এগাছটির চাষ করতে অনেকেরই এখন অনিহা দেখা যায়। তবে এব্যাপারে প্রতি বছরই সরকারি ভাবেউপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কিছু কর্মসূচী পালন করা হলেও নিজ উদ্যোগে এখন আরকেউ তালগাছের চারা রোপন করতে চায় না। প্রতিবছর বৃক্ষ রোপন মৌসুমে অন্যান্য বৃক্ষচারার সহিত যদি তালগাছের বীজ/চারা বেশী বেশী করে সকলে মিলে রোপন করা যায় আরনির্বিচারে যদি তালগাছ নিধন না করা হয় তাহলে আমাদের এ দেশে আবারও উপকারী ফলতালগাছ ফিরে পাবে হারানো ঐতিহ্য। তার সাথে নিশ্চিত হবে আগামীর খাদ্য পুষ্টি, অর্থ ওসমৃদ্ধি। এই তাল বৃক্ষটি তার শিশুকাল থেকেই এর রোপন ও পরিচর্চাকারীকে অর্থনেতিককর্মকান্ডে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকে। তালফল ও তালগাছের বহুবিধ ব্যবহার ও পুষ্টিগুনাগুন বিবেচনায় দেশীয় ফলের মাঝে তালের অবদান শীর্ষে। অজ্ঞতা ও দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজেরচাহিদার কারণে দিন দিন যেভাবে তালগাছ নিধন করা হচ্ছে এতে প্রকৃতি পরিবেশ হারাচ্ছেতার অপরূপ সৌন্দর্য। নয়নাঢিাম সারি সারি তালগাছ, গাছে গাছে তাল ফল ও তালগাছেবাবুই পাখির বাসা আজ আর তেমন চোখে পড়ে না। শুধু এতেই শেষ না, পাখিদের নিরাপদনিবিড় আবাস গড়বে তালগাছের নিবিড় বনায়ন। তালগাছের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও নিরাপত্তারজন্যই তো কারিগরি বাবুই পাখীরা এত সব গাছ থাকতে একমাত্র তাল গাছকেই বেছে নিয়েছেবসবাসের নিরাপদ স্থান হিসাবে। গুচ্ছ মূলী বৃহৎ অশাখ বৃক্ষ তালগাছের গোড়ার দিকমোটা, উপরের অংশ তুলনামূলক চিকন, কান্ডের মাথায় বোটা ও পাতা গুচ্ছ ভাবে সাজানো থাকেও বোটার দু-ধারে করাতের মতো দাঁত আছে, বোটা শক্ত ও খুব পুরু। গাছ উচ্চতায় ২০ থেকে ২৫মিটার হয়ে থাকে এবং দীর্ঘ জীবি উদ্ভিদের মাঝে অন্যতম হচ্ছে তালগাছ। ১৪০ থেকে ১৫০বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তুলনামূলক ভাবে রোগ বালাইও কম। তালগাছ পুরুষ ও স্ত্রী উভয়লিঙ্গ গাছ, একই গাছে দু-রকম ফুল ফুটেনা। পুরুষ গাছে ফুল হয়, ফল হয়না, ফুল জটা নামেপরিচিত। মঞ্জুরির রঙ হলুদ, লম্বা আকৃতির, বসন্তে গাছে ফুল ধরে। তালগাছের বৃদ্ধি ধীরগতি সম্পন্ন, বীজ রোপনের ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সে গাছে ফল ধরে। তাল ফলে এক থেকে দুটি বাতিনটি আঁটির ফল ধরতে দেখা যায়। ফল পাকে ভাদ্র মাসে, তবে কোন কোন গাছে বছরেরঅন্যসময় ফল ধরতে দেখা যায়। পাকা ফলের ঘ্রাণ তিব্র সু-গন্ধযুক্ত, স্বাধে মিষ্টি থেকে পানসেমিষ্টি হয়। প্রায় সব ধরনের মাটিতে তাল গাছ জন্মে। সহজ রোপন পদ্ধতি, কষ্ট সহিষ্ণু, কমযতেœ উৎপাদন ও বৃদ্ধির ফলে গ্রামীণ সড়ক, মহাসড়ক, বাঁধ বেড়িবাঁধ, রেল লাইন, পুকুরপাড়, খালের পাড়, নদীর পাড়, জমির আঁইল, পতিত জমি ও বসতবাড়ীর শেষ সীমানায় তালগাছরোপন উপযোগী স্থান। উল্লেখ্য, তালের পাতা দিয়ে হাত পাখা, মাদুর, টুপি, ঘরের ছাউনী, চাটাই, ছাতা, লাকরীহিসেবে ব্যবহৃত হয়। গাছের ফাইবার বা আঁশ থেকে বিভিন্ন রকমের সৌখিন সামগ্রীতৈরি হয়, যথা- টুপি, ঝুড়ি, ব্রাশ পাপোষ, ছোট বাষ্কেট, ও মাছ ধরার খলশানীতে ব্যবহৃতহয়। পুরুষ গাছের ফুল বা জটা হতে রস সংগ্রহ করে তা দিয়ে গুড়, পাটালি, ভিনেগার, পিঠা,বড়া, লুচি, ইত্যাদি তৈরি করা হয়। পাকা তালের রস দিয়ে পিঠা, বড়া, খির, পায়েস তৈরিকরা হয়। কচি ও কাঁচা তালের নরম শাঁস মুখরোচক পুষ্টিকর ও ছোট বড় সবার প্রিয়। এছাড়াগ্রীষ্মের তৃষ্ণা নিবারনে কাজ করে। তাল গাছের গোড়ার অংশ দিয়ে ডিঙ্গি নৌকা তৈরি, শক্তও মজবুত বলে ঘরের খুটি, আড়া, রুয়া, বাটাম, কৃষকের লাঙ্গলের ঈষ তৈরি করা হয়। গাছ শক্তমজবুত গভীর মূলী বলে ঝড় তুফান, টর্নেডোর বাতাস প্রতিরোধ ও মাটি ক্ষয় রোধে তালেরগাছের ভূমিকা অতুলনীয়। বিশেষ করে বজ্রপাত প্রতিরোধ করে এবং মৃত্যুর কবল থেকে রক্ষা করে।
তাল ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার, তালের রস শেন্টমানাশক, সূত্র বর্ধক, প্রদাহ ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিবারণ করে। রস থেকে তৈরি তাল মিসরি সর্দি কাশিতে মহৌষুধ হিসেবে কাজকরে। যকৃতের দোষ নিবারক ও পিত্তনাষক হিসেবেও কাজ করে থাকে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরও খবর
Copyright &copy 2022 The Daily Uttar Kon. All Rights Reserved.
Powered By Konvex Technologies