কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: দেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণ ও শিল্পায়ন জোরদারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সম্প্রতি নয়টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে। বেজার পরিচালনা পর্ষদের অষ্টম সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুড়িগ্রামের প্রস্তাবিত ভুটান-বাংলাদেশ যৌথ অর্থনৈতিক অঞ্চল। সূত্র মতে, অনুমোদিত অঞ্চলের মধ্যে সাতটি আগে থেকেই নীতিগত অনুমোদনপ্রাপ্ত ছিল, এবার সেগুলোর আনুষ্ঠানিক অনুমোদন সম্পন্ন হয়েছে। বাকি দুটি অঞ্চল অনুমোদিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে। এই নয়টি অঞ্চলের মোট জমির পরিমাণ প্রায় ৪,৫৭৪ একর। সরকারি মালিকানায় অনুমোদিত দুটি অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরা সদরে ১১৩ একর জমিতে ‘সাতক্ষীরা অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এবং রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় ৪২৮ একরের ‘রংপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল (কাউনিয়া)’। জিটুজি (সরকারি-সরকারি) ভিত্তিক দুটি অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুড়িগ্রামে প্রস্তাবিত ২০০ একরের একটি অঞ্চল, যা বাংলাদেশ ও ভুটানের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য দুই দেশের মধ্যে ২০২৪ সালের ২৫ মার্চ একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অন্যদিকে, চাঁদপুরে ৩,০৩৭ একর জমিতে একটি চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে, যেখানে ২০২৩ সালেই চীনা দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। এছাড়া বেসরকারি খাতে পাঁচটি নতুন অঞ্চল অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মেঘনা গ্রুপের দুটি প্রকল্প—‘কুমিল্লা অর্থনৈতিক অঞ্চল’ (৩৬০ একর) এবং ‘তিতাস ইকোনমিক জোন’ (১৬০ একর)। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জে ‘পূর্বগাঁও অর্থনৈতিক অঞ্চল’, ভোলায় ‘ভোলা ইকো ডেভেলপমেন্ট জোন’ এবং নরসিংদীতে ‘আমানত শাহ স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ অনুমোদিত হয়েছে। বেজার তথ্যমতে, চীন, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে জিটুজি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে, যদিও দ্বিপাক্ষিক কিছু জটিলতা কারণে প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি কিছুটা ধীরগতির। পরিবেশগত নীতিমালা ও সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াও এখন কোনো নতুন অঞ্চলকে প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ স্থগিত রেখেছে। ফলে ইউটিলিটি সেবা নিশ্চিতে সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে, নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।