মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পেট্রল পাম্প বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ‘বিনা নোটিশে’ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে পট্রল পাম্প বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী বিভাগীয় কমিটি এই ঘোষণা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে সংগঠনের রাজশাহী বিভাগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোঃ মিজানুর রহমান রতন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকে পেট্রল পাম্প বন্ধ রয়েছে। অনেকে এ ঘোষণা আগে জানতে না পেরে পাম্পে তেল নিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। পেট্রোলিয়াম ডিলারস, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী বিভাগীয় শাখার জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর সড়ক ও জনপথ বিভাগ পূর্ব ঘোষণা, নোটিশ বা আনুষ্ঠানিক চিঠি না দিয়ে আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে। তাতে পেট্রল পাম্প মালিকেরা চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
এমন কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ধারিত সব নিয়মকানুন মেনে ও বৈধ লাইসেন্স অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। নিয়মিত রাজস্ব দিয়ে আমরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছি। অথচ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালিত হয়ে এলেও অতীতে কখনো এমন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়নি। এতে আমাদের মধ্যে উদ্বেগ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।’ সংগঠনের রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল বলেন, নওগাঁয় হামিম পাম্পে মিটার ফেলে দেওয়া হয়েছে। অতি উৎসাহিতভাবে ড্রেন খুঁড়ে দেওয়া হয়, যেন পাম্পে গাড়ি ঢুকতে না পারে। আনিকা পাম্পেও ভাঙচুর করা হয়। কোনো নোটিশ ছাড়া তারা মূলত পাম্পগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য করেছে। প্রতিবছর উচ্ছেদ অভিযান চললেও ২৬ বছরে পুরোনো পাম্পে কখনো এ ধরনের অভিযান দেখা যায়নি। এর প্রতিবাদে এমন কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলায় একযোগে পেট্রল পাম্প বন্ধ রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি। রাজশাহী বিভাগীয় পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মিজানুর রহমান রতন জানান, গত ২৯ জানুয়ারি সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো নোটিশ ছাড়াই বেশ কয়েকটি পেট্রোল পাম্প পরিদর্শন করে অবৈধ ঘোষণা করে মাইকিং করে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করলেও নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কয়েকটি পেট্রোল পাম্প ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। অথচ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে থেকে বৈধভাবে লিজ নিয়ে ব্যবসা করে আসছে সবাই। বর্তমানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিছু কর্মকর্তা লিজের পরিবর্তে ঐ জায়গা কিনে নিতে বলছে। তেল ব্যবসায়ীরা জায়গা কিনে নিতে রাজি হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্র্কতারা জায়গা লিখে দিবে না বলে জানান। এই নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে সড়ক ও জনপথ সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারী ভাবে এ উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। অথচ এ নিয়ে হাইকোর্ট মামলাও চলমান রয়েছে। স্বেচ্ছাচারী ভাবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরাঞ্চলের সকল প্রকার তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।