নন্দীগ্রাম উপজেলার হাফিজুর নামের জনৈক বিএনপি নেতার সাংবাদিক সম্মেলনের প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন নন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ আলাউদ্দিন সরকার। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি জনগণের আস্থার জায়গা। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই রাষ্ট্র সবার এবং নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকারও সবার আছে। গত ২৬/১২/২৪ইং তারিখে নন্দীগ্রাম থানার অন্তর্গত ধুন্দার এলাকার মোঃ হাফিজুর রহমান, পিতা: মছির উদ্দিন, সাং- আপুছাগাড়ি, নন্দীগ্রাম, বগুড়া। সে বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি ত্যাগী ও জননন্দিত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মিথ্যাচার করেছেন হাফিজুর রহমান নামের ব্যক্তি। মিথ্যাচার করে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি ও দলের সিনিয়র নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা করেছে। আমরা ঐ মিথ্যাচার করা সংবাদ সম্মেলন এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।হাফিজুর রহমান নামের ব্যক্তি নিজেকে নন্দীগ্রাম উপজেলার এক নং বুড়ইল ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বিএনপির সহ-সভাপতি উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করলেও তিনি ঐ পদের কেউ নন। আমার জানামতে হাজারকী মৌজার দুটি সরকারি খাসপুকুর দখল কে কেন্দ্র করে মোঃগোলাম রব্বানী ও হাফিজুর রহমান স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের উপর নির্যাতন ও অত্যাচার করে এবং জীবননাশের হুমকি দেয়। সন্ত্রাসী কায়দায় একাধিকবার পুকুর দখলের চেষ্টা করেছে তারা। উক্ত খাস সরকারি দুটি পুকুর দখল করার জন্য গোলাম রব্বানী এবং হাফিজুর রহমান আমাকে বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব দেয়।কিন্তু আমি ঐ প্রস্তাবে রাজি না হয়ে তাদেরকে আইনের মাধ্যমে সমাধানের কথা বলি। কিন্তু উনাদের কথা হচ্ছে আপনি বিএনপির সভাপতি হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে পুকুর দুটি দখল করে দেন, তার বিনিময়ে আপনাকে মোটা অংকের টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু আমি তাদের দেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি এবং বলি দলের নাম ব্যবহার করে কোন অসঙ্গতি কাজ আমার দ্বারা সম্ভব নয়। দলের ক্ষতি হবে এমন কোন কাজ আমি করতে পারবো না। যেহেতু গোলাম রব্বানী ও হাফিজুর মোটা অংকের টাকা নিয়েছে ঐ পুকুরগুলো দখল করে দিবে এই মর্মে। যখন তারা পুকুর দখল করতে ব্যর্থ হয় তখন তারা মরিয়া হয়ে ওঠে এবং দলের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন মাধ্যমে পুকুর দখল করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে থানায় ঐ পুকুর বিষয়ে অভিযোগ যায়। সেখানে কোন সুরাহা না হওয়ায় থানা অভিযোগটি কোর্টে পাঠিয়ে দেয়।যার মামলা নং৬৭/২০২৪ এবং ঐ মামলার পাঁচ নং সাক্ষী হিসেবে হাফিজুরের নাম আছে। আমি যতটুকু জানি ঐ মামলাটি কোর্টে খারিজ হয়ে যায়। তখন তারা নিরুপায় হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হিংসার বশীভূত হয়ে হাফিজার কোর্টে একটি ব্যক্তিগত মামলা দায়ের করে, যেটি ছিল প্রায় তের মাস আগের ঘটনা।এখন বাদী হাফিজুরের মামলার সাক্ষীদের নাকি আমি সাক্ষ্য দিতে নিষেধ করি এবং অর্থ নেওয়ার কথা বলে- যাহা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন; কারণ হাফিজুর নিজেই বলেছেন তার ধারণা। শুধুমাত্র ধারণা করে মিথ্যাচারের মাধ্যমে বিএনপি এবং দলের নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা করেছে মাত্র।সংবাদ সম্মেলনে হাফিজুর রহমান মোশারফ এর ভগ্নিপতি কথাটি উল্লেখ করেছেন এই কথার প্রেক্ষিতে বোঝা যায় অভিযোগটি সম্পূর্ন পরিকল্পিত বানানো ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ আমার নাম ও পদবী আছে, আমি নন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বগুড়া জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। উক্ত হাফিজুর রহমান ও গোলাম রব্বানী আমাকে এবং সাবেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন কে বিএনপি- দলের কাছে সুনাম নষ্ট করার লক্ষ্যে অপপ্রচারটি চালাচ্ছে। যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। উনারা যে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন তা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। হাফিজুর এর ভাষ্যমতে সে ঐ দিন নিজ বাড়ি থেকে বিএনপির প্রোগ্রামে যাচ্ছিল এবং পথের মধ্যে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছিল। যদিও সেই সময় কোন ত্যাগী নেতা কর্মী বাড়িতে থাকতে পারতো না কিন্তু সে নিজ বাসভবনে দিনের পর দিন থেকেছেন, তাহলে আপনারই বুঝুন উনি কেমন ত্যাগী কর্মী ছিলেন! উনি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ৫ই আগস্ট এর আগে দলীয় প্রোগ্রামে ও কর্মসূচিতে তার অংশগ্রহণ আমি তেমন দেখিনি, বর্তমানে এরা সুযোগসন্ধানী ও হাইব্রিড কর্মী।প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেনের ব্যাপারে হাফিজার রহমান যে অভিযোগ করেছে যে, “সাত-আটবার গিয়েছি মামলা করার অনুমতি নেওয়ার জন্য” এটা ভিত্তিহীন একটি কথা। আমি যতদূর জানি সাবেক এমপি মহোদয় হাফিজুরকে বলেছিলেন, “যারা অপরাধ ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা কর কিন্তু কোন নিরপরাধ সংখ্যালঘুদের যেন আসামি না করা হয়। কারণ দেশে বা আমার এলাকায় সাম্প্রদায়িক কোন সমস্যা যেন সৃষ্টি না হয়। তুমি মামলা কর কোন সমস্যা নাই।”নন্দীগ্রামের একটা কুচক্রী মহল আওয়ামী দোসররা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে। ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে লাগাতার অপপ্রচার করে যাচ্ছে। অপপ্রচারকারীদের আইনের আয়তায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। বগুলা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জঊউগ এমপি হাহাগঊফ হোসেন এর নেতৃত্বে দলের দুঃসময় ক্লান্তি- কাল থেকে শুরু করে বর্তমানেওনন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন। তৃণমূল কর্মীপ্রিয়, জনপ্রিয় নেতার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন এবং নন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপি নেতাদের বিতর্কিত করতে স্বৈরাচার আওয়ামী দোসরা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে।মূলত তাদের অপপ্রচারটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা, ভিত্তিহীন বানোয়াট। তাদের এই অপপ্রচারের জন্য আমি তীর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”