1. nobinbogra@gmail.com : Md. Nobirul Islam (Nobin) : Md. Nobirul Islam (Nobin)
  2. bd.momin95@gmail.com : sojibmomin :
  3. bd.momin00@gmail.com : Abdullah Momin : Abdullah Momin
  4. bd.momin@gmail.com : Uttarkon2 : Uttar kon
আদমদীঘির ঐতিহ্যবাহী শাওইল গ্রামের উলের কম্বলের হাট জমতে শুরু করেছে - Uttarkon
বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিসে’ করার সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে বগুড়ায় শীতবস্ত্র বিতরণ ওষুধ, রেস্তোরাঁ ও পোশাকে ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্ত মার্কিন নতুন প্রশাসনের সাথে সম্পর্ক আরো বাড়বে : নজরুল ইসলাম গণহত্যার বিচারে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জের আবেদন খারিজ ইউক্রেন চুক্তি না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে : ট্রাম্প বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সময় গুলিবিদ্ধ ও বিভিন্ন রোগে অসুস্থ রোগীদের পাশে সাবেক এমপি লালু শহীদ জিয়াউর রহমান মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন-সাবেক এমপি লালু দেশ ও মানুষের স্বার্থে সংস্কার প্রত্যাশী জামায়াত: মিয়া গোলাম পরওয়ার পাবনায় বন্ধু ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এক হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ

আদমদীঘির ঐতিহ্যবাহী শাওইল গ্রামের উলের কম্বলের হাট জমতে শুরু করেছে

  • সম্পাদনার সময় : সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৩১ বার প্রদশিত হয়েছে

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শাওইল গ্রামের উলের কম্বলের হাট ধীরে ধীরে জমতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের তাঁত শিল্পের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে শাওইল সহ তার আশে পাশের তাঁত শিল্প। উত্তরবঙ্গেও এই তাঁতি গোষ্ঠী আজও ধরে রেখেছে তাঁত সংস্কৃতি। গ্রামের নাম শাওইল। বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের ছোট একটি গ্রাম। এই গ্রামে অনেক আগে থেকেই তাঁতি শ্রেনীর মানুষের বসবাস। আর তার ফলে শাওইল গ্রামে তখন থেকেই এক ভিন্নধর্মী হাট গড়ে ওঠে। যার মূল শীতের চাদর কম্বল উলের (উলেন) সুতা কেনাবেচা। পর্যায় ক্রমে এই হাটের প্রাচীনতা আর জনপ্রিয়তার জন্য এবং চাদর কম্বল মূলত এই হাটে বেচাকেনা হয় বলে এই হাটের নাম দিয়েছে মানুষ “শাওইল গ্রামের উলের চাদর কম্বল হাটের গ্রাম”। প্রতি সপ্তাহে রবিবার ও বুধবার ভোর ৪টা থেকে শুরু হয়ে কেনা বেচা চলে সকাল ১০টা পর্যন্ত। তাছাড়া এই হাট বসে প্রতিদিনই। এই হাটকে ঘিরে এলাকায় প্রায় ৫০টি গ্রামে গড়ে উঠেছে তাঁতি পল্লী। তারাই কম্বল কেন্দ্রিক এ শিল্পের এক বিশাল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। যখন শাওইলের হাট বসে তখন মনে হয় যেন মেলা বসেছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাইকারী ব্যবসায়ীদের পদচারনায় সব সময় মুখরিত গ্রামের পথঘাট। এই হাটকে ঘিরে চলে রাজধানী ঢাকা সহ সারাদেশ থেকে আসা ব্যবসায়ীদের চাদর কম্বল আর সুতা কেনার প্রতিযোগিতা। হাটের চার পাশে ঘিরে শত শত ট্রাক, বেবিট্যাক্সি, রিক্সা-ভ্যান এর উপস্থিতি। তাঁতের খটখট শব্দে আর সুতার বুননে মিশে আছে শাওইল সহ আশে পাশের গ্রামের মানুষের স্বপ্ন। কারও রয়েছে নিজের তাঁত আবার কেউ শ্রম দিচ্ছে অন্যের তাঁতে। প্রযুক্তি দাপট তারপরেও এই আদি শিল্প শাওইল গ্রাম সহ আশে পাশের গ্রামের মানুষের আকড়ে ধরে আছে। গ্রাম জুড়ে একটানা তাঁতের খটখট শব্দে মুখরিত গ্রামের পরিবেশ আর নারী-পুরুষ সহ নানা পেশার মানুষের কর্মব্যস্ততা। কেউ সুতা ছাড়াচ্ছে আবার কেউ বা চরকা নিয়ে বসে সুতা নলি বা সূচিতে ওঠাচ্ছে কেউ বা সুতা ববিন করছে। প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায় ও ঘরে বসানো পরিপাটি তাঁত যন্ত্র দিন রাত চলছে। প্রতিটি বাড়িতেই কম করে হলেও একটা আর ২টা থেকে ১০টা পর্যন্ত তাঁত রয়েছে। কোনাটা চাকাওয়ালা আবার কোনাটা একেবারেই বাঁশ কাঠ দিয়ে হাতের তৈরী। শাওইল ছাড়াও দত্তবাড়িয়া, মঙ্গলপুর, দেলুঞ্জ সহ আশে পাশের প্রায় ৫০ গ্রামের চিত্র একই ধরনের। শাওইল গ্রামের চারে পাশে তাঁতিদের অধিকাংশ মানুষের মূল পেশায় তাঁত শিল্পকে ঘিরে। আশে পাশের ৫০ গ্রামে ১০ হাজারেরও বেশি তাঁতি পরিবার আছে আর এ শিল্পকে ঘিরে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম চলে। কেউ বংশ পরম্পরায় আবার কেউবা নতুন করে। শীত শুরুর আগেই শাওইল সহ আশেপাশের তাঁতিরা শুরু করে কম্বল তৈরী ও সুতা বোনা ও সুতার তৈরী বড় চাদর কম্বল, বিছানার চাদর থেকে শুরু করে লেডিস চাদর, কম্বল, লুঙ্গি, গামছা, তোয়ালা সহ নানা ধরনের শীত বস্ত্র ও পোষাক।
শাওইল বাজারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, জুয়েল আহম্মেদ, মোফাজ্জল হোসেন, শাহজাহান, জাহিদ সহ অনেকেই জানান-শাওইল হাটে শুরুতে পাঁচটি দোকান থাকলেও এখন শাওইলের দোকান রয়েছে ছোট বড় মিলে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার দোকান। আর তৈরী হয়েছে নতুন নতুন আধুনি কারিগর। খুব উন্নত মানের চাদর হওয়ায় এই চাদরের চাহিদা বাংলাদেশে ব্যাপক। এছাড়া এই চাদর গুলোর মান উন্নত হওয়ায় দেশের বাহিরেও যায়। বিভিন্ন গার্মেন্টসের সোয়াটারের সুতা প্রক্রিয়া করে তাঁতে বুনিয়ে তৈরী হয় কম্বল, চাদর সহ আনুষাঙ্গিক পন্য। কোন ধরনের প্রচার ও সরকারি-বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াই এখানে গড়ে উঠেছে বিশাল এই কর্মক্ষেত্র। চাদর তৈরীর পাশাপাশি এখানে গড়ে উঠেছে শীত বস্ত্র তৈরীর মেশিন, সুতা, রং, তাঁতের চরকা, তাঁত মেশিনের সরঞ্জাম ও লাটায়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বাজারের আশে পাশে গড়ে উঠেছে ছোট বড় অনেক দোকান। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত লট থেকে সুতা বাছাই, ফেটি তৈরী কিংবা সুতা সাজিয়ে রাখে। দিনে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা মজুরিতে নিয়োজিত এসব কর্মচারীর অধিকাংশ আশে পাশের গ্রামের দরিদ্র মহিলা। শাওইলের চাদর আর কম্বল এর গ্রামকে ঘিরে হাজারো সম্ভাবনা থাকলেও তা সম্ভাবনার খাত হিসাবে কেউ দেখছে না। তাঁতিদের মাঝে সরকারি সবিধা বাড়াতে পারলে গ্রামটি হতো একটি দৃষ্টান্ত মূলক রপ্তানির ক্ষেত্র। তাঁতশিল্পিদের পর্যাপ্ত মুলধনের জোগান, সুস্থভাবে বাজারজাত করনের সুযোগ এবং ঠিকমতো কাচামাল সরবরাহ করলে এখনও আগের মত জনপ্রিয় আর গৌরবময় করে তোলা যায় এদেশের তাঁতশিল্পকে। এদেশের শিল্প সৌন্দর্যেও এক ধারাকে বাচানো যায় ধ্বংসের হাত থেকে। প্রয়োজন কেবল একটু উদ্যোগ। আর তা পেলেই বেচে থাকে এদেশের তাঁতিশিল্প।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরও খবর
Copyright &copy 2022 The Daily Uttar Kon. All Rights Reserved.
Powered By Konvex Technologies