গাবতলী (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার গাবতলীতে এলোপাতারি ছুড়িকাঘাতে সহোদর তিন ভাইয়ের পেটের ভুড়ি ক্ষতবিক্ষত করেছে প্রতিপক্ষরা। এতে ঘটনাস্থলেই সজল প্রামানিক (৫৩) নামের একজন নিহত হয়েছেন। অপর দুই ভাই এখন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান হাসপাতালে (শজিমেক) মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। ঘটনার পরপরই উত্তেজিত জনতা হামলাকারীদের বাড়ীঘরে আগুন দেয়। পরে খবর পেয়ে গাবতলী ফায়ার সার্ভিস উপস্থিত হয়ে তা নিভিয়ে ফেলে। তবে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। খবর পেয়ে সেনা বাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি শান্ত করেন। বরেন্দ্র বহুমুখী সেচপাম্প ও জমিতে পানিসেচ দেয়ার পাওনা ধানের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ৮ই ডিসেম্বর রোববার প্রায় ১১টায় উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়নের তেলিহাটা দক্ষিণপাড়া ফকিরপাড়া গ্রামে এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। সরেজমিনে জানা যায়, উল্লেখিত তেলিহাটা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মহিরুদ্দিন খোকার ছেলে সজল প্রামানিক গত ২বছর আগে বসতবাড়ীর পার্শ্ববর্তী নিজ জমিতে আলুর চারা রোপন করে। কিন্তু একই ইউনিয়নের তেলিহাটা ফকিরপাড়া গ্রামের প্রতিবেশি সিরাজুল মোল্লা (৫৬) শত্রুতা করে তার বরেন্দ্র বহুমুখী সেচপাম্প থেকে পানি দিয়ে সজলের আলুর চারা নষ্ট করে ফেলে। এ নিয়ে সজল প্রামানিক প্রতিবাদ করলে সিরাজুল মোল্লা ও তার লোকজন বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে সজল ও তার ভাতিজা তাওহীদ বাবুর মাথায় রামদা ও কোদালের আঘাতে মাথা দ্বি-খন্ডিত ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এ ঘটনায় গত ২বছর আগে সজলের স্ত্রী সাবিনা বেগম বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তাওহীদ বাবু এখন হাটাচলা করতে পারেন না। অনেকটাই প্রতিবন্ধীর মতো হয়েছেন। মামলা করার কারণে তখন থেকেই চরমভাবে ক্ষুব্ধ ও আরো প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠে সিরাজুল মোল্লা ও তার লোকজন। এরই একপর্যায়ে গতকাল রোববার সকালে কৃষক সজল প্রামানিক ও তার আপন দুইভাই বাড়ীর পার্শ্ববর্তী জমিতে পূর্বে কেটে রাখা পাকা ধানের আঁটি বাধাই করতে এবং কৃষকদের কাছ থেকে পানি সেচের পাওনা ধান আনতে যান। এ সময় আগে থেকেই ওঁত পেতে থাকা প্রতিপক্ষ সিরাজুল মোল্লা ও তিন ছেলে জনি, আরিফুল ও শরীফুল অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে এলোপাতারি ছুড়িকাঘাতে সজল প্রামানিকের পেটের ভুড়ি বের করে ফেলে। এ সময় সজলের আপন দুইভাই রুবেল ও সোহেল এগিয়ে এলে তাদেরকেও পেটে ছুড়িকাঘাত করে। স্থানীয়রা আশংজনক অবস্থায় ওই তিনভাইকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে সজল প্রামানিক মারা যান। আহত দুই ভাইয়ের মধ্যে সোহেল আশংজনক অবস্থায় রয়েছেন বলে একাধিক সূত্র জানায়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গাবতলী সার্কেল) নিয়াজ মেহেদী, বগুড়া ডিবি পুলিশের ইনচার্জ মোস্তাফিজ হাসান, ওসি আশিক ইকবাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে গাবতলী থানার ওশি আশিক ইকবাল বলেন, পূর্ব শত্রæতার জের ধরে সজল প্রামানিক নামের এক কৃষককে খুন করা হয়েছে। দুইজন গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যেই পুলিশ কাজ করছে।