পাবনা প্রতিনিধি: ছয়দিনের মাথায় আবারও হত্যাকাণ্ড ঘটলো পাবনায়। এবার জেলার সাঁথিয়ায় আত্মসমর্পণ করা সাবেক এক চরমপন্থি সদস্য বাকুল মিয়া (৪৫) কে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (২৪ নভেম্বর) রাত নয়টার দিকে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ধুলাউড়ি ইউনিয়নের রাউতি উত্তরপাড়া স্কুলের পাশে এ ঘটনা ঘটে। সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত বাকুল মিয়া উপজেলার রাউতি গ্রামের মো. রওশন আলীর ছেলে। সংসারে তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এ ঘটনায় বাকুলের ভাতিজা আলেপ হোসেন (২৫) কেও কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত আলেপ একই গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে।vএ নিয়ে গত ১৬ নভেম্বর থেকে নয়দিনে পাবনা জেলায় চারটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো। নিহত বাকুলের ছেলে রাসেল মিয়া জানান, ’চরমপন্থি জীবন থেকে ফিরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন আমার আব্বা। তারপর গ্রামে থেকে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতেন। রোববার রাতে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন তিনি। এ সময় একই গ্রামের জালাল মাস্টার এসে তাকে জানায় তার ধান নিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিতে। তখন আমার চাচাতো ভাই আলেপকে নিয়ে আমার আব্বা ঘোড়ার গাড়িতে ধান নিয়ে জলিল মাস্টারের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।’ পথিমধ্যে রাউতি উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে রাস্তার ওপর পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত বাকুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। এ সময় তার সাথে থাকা ভাতিজা আলেপ বাধা দিতে গেলে তাকেও এলোপাথারি কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আহত আলেপকে উদ্ধার করে সাঁথিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে এবং পুলিশকে জানায়। সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। সোমবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’ ওসি আরো বলেন, ‘কারা, কি কারণে তাকে হত্যা করেছে তা এই মুহুর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে নিহত বাকুল আগে চরমপন্থি দলের সাথে যুক্ত ছিলেন। পরে তিনি আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল বিকেলে পাবনার শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের আইজি’র কাছে পাবনাসহ ১৪ জেলার ৫৯৫ জন চরমপন্থি নেতা ও সদস্য আত্মসমর্পণ করেন।