বেক্সিমকোর কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে গাজীপুর মহানগরীর পানিশাইল এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা আরেকটি কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এ সময় শ্রমিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর পানিশাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। সংঘর্ষ চলাকালীন উত্তেজিত শ্রমিকরা জিরানি বাজারের পাশে অ্যামাজন নিটওয়্যার নামে একটি কারখানায় অগ্নিসংযোগ করেন। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শ্রমিক, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেক্সিমকোর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা সকাল থেকে গাজীপুর মহানগরীর চক্রবর্তী এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ কারণে আশপাশের অন্তত ২০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ১ নভেম্বর থেকে পানিশাইল এলাকার ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। রোববার কারখানা খুলে দেওয়া হলেও দুপুরের পর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা কারখানা অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। আরও জানা গেছে, এ সময় শ্রমিকরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভে শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের জিরানী এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। একই সময়ে একই সড়কের পৃথক স্থানে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরাও অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন। এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ডরিন ফ্যাশন ও বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হন। আহত শ্রমিকদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা পানিশাইল ও কলতাসুতি এলাকায় ঢুকে পড়ে এলাকার লোকজনদের মারধর করেন। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া দেন। বেশ কিছু সময় ত্রিমুখী পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ সময় অ্যামাজন নিটওয়্যার নামের একটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, জিরাবো এলাকায় বিগবস কারখানার সামনে একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে কাশিমপুর থেকে দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ছাড়া আশুলিয়ায় অ্যামাজন নিটওয়্যার কারখানায় আগুনের ঘটনা ঘটেছে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে ফায়ার সার্ভিস।