বগুড়া জেলার বিস্তীর্ণ মাঠ ভরা মাচায় শিমের বাগানে রঙিন ফুলে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে রঙিন শিম ফুল। আবার ফুলের মাঝে শোভা পাচ্ছে থোকা থোকা সবুজ শিম। মনে হয় এ যেন প্রকৃতির নান্দনিক ফুলের বাগান। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রামপুর গ্রামের কৃষক নজিবুল ইসলামের মাচায় ওঠা শিমের সবুজ বাগানের দৃশ্য এমনই মনোমুগ্ধকর।
জানা যায়, বগুড়া জেলার শাজাহানপুর, শেরপুর, ধুনট, সোনাতলা, গাবতলী, শিবগঞ্জ, সারিয়াকান্দি, কাহালুসহ অন্যান্য উপজেলার মাঠ জুড়ে শিমের আদাব শোভা পাচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিমের আবাদ হয়েছে শেরপুর ও শাজাহানপুর উপজেলায়। কৃষকরা শিমের ভালো দাম পাবার আশায় গতবারের চেয়ে এবারে শিমের আবাদের প্রতি ঝুঁকছে। দামও ভালো পাচ্ছে। আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাসের শেষ পর্যন্ত শিমের বীজ বপন মৌসুম হলেও চলতি বছর বৃষ্টির কারণে তা পিছিয়ে আশ্বিনে শুরু করতে হয়েছে। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও সবুজ লকলকে গাছের মাথায় শিম চাষিদের মনে আনন্দের দোল দিচ্ছে। এবার শুরু থেকেই বাজার ভালো। তবে বিভিন্ন পোকার আক্রমণ চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিল চাষিদের কপালে। শত রোগবালাইয়ের মাঝেও থেমে নেই শিম গাছের পরিচর্যা। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে দিন দিন শিম চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। এবার শিমের ফলন বাম্পার হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বিগত বছরের চেয়ে চলতি বছরে জেলায় বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে শিম। জেলার চাষিরা অন্যান্য আবাদের পাশাপাশি লাভের আশায় শিম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। বগুড়ার বাজারে শিমের দাম ভালো। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে বগুড়ার শিম। তবে জেলার অন্যান্য উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিমের আবাদ হয়েছে শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলায়।
শাজাহানপুর উপজেলার শিম চাষি নজিবুল ইসলাম জানান, এ বছর ৩ বিঘা জমিতে শিম চাষ করে সর্বসাকুল্যে খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। ভালো ফলনের কারণে আড়াই লক্ষ ঘরে আসবে এমন আশা করছি। তিনি আরও জানান, শিম বাগানে প্রতিনিয়ত কয়েকজন শ্রমিক কাজ করে এবং ২ থেকে ৩ দিন পর পর ক্ষেত হতে শিম সংগ্রহ করে বাজারজাত করি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা জমি থেকেই শিম কিনে নিয়ে যাচ্ছে। শেরপুর উপজেলার পাইকারী ব্যবসায়ী এনামুল হক জানান, জমি থেকে শিম কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করি। বগুড়ার শিমের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। শিম চাষিদের পরামর্শ দিতে মাঠ ও উপজেলা পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা শিম চাষে ঝুঁকছেন।