মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: দেশের সংকট কাটিয়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশে প্রকৃত গণতন্ত্র উপহার দিতে হবে দাবি জানিয়েছেন, অন্তর্র্বতী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু । তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তারেক রহমানের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, আগামী সাতদিনের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে তাকে মুক্ত রাজনীতির চর্চা করতে দিতে হবে।
অন্যথায় রাজপথে নেমে জীবন দিয়ে হলেও তারা তাদের নেতাকে ফিরিয়ে আনবেন।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাজশাহীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ দাবি জানান বিএনপির নেতা মিনু।
এর আগে সকালে তিনি ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট সংলগ্ন বড় মসজিদ প্রাঙ্গণে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় তার সঙ্গে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলসহ স্থানীয় বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্য দিতে গিয়ে শুরুতেই মিজানুর রহমান মিনু ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ফ্যাসিস্ট সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে ৫ আগস্ট বিতাড়িত করতে গিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে মিনু বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন। আর তার এ ঘোষণার মাধ্যমেই দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে দেশটাকে স্বাধীন করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে জাতি যখন দিশেহারা ছিল। সে সময়ে মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেদিন সারাবিশ্বের মহানায়ক ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে খুনি হাসিনাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। আর এ আন্দোলন যখন কঠিন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে পড়ে যায়, ঠিক তখনই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুদূর লন্ডনে থেকেও পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে সাহস জুগিয়েছেন। ফলে হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তবে এটা ১৯৭৫ সালের মতো নয়। তাই এ স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। এসব আন্দোলনে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত ও সুস্থতা কামনা করেন সেইসঙ্গে যুদ্ধের সময় সম্ভ্রম হারানো নারীদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।
মিনু বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের বাইরে আছেন। এছাড়া সরকার পতনের এ আন্দোলন চলাকালে ৬৭ জন গুম ও সাড়ে সাত হাজারের ওপরে নিহত হয়েছেন। গত আন্দোলনে ৯৯৭ জন খুন হয়েছে। আর এর মধ্যে ৪২৭ জনই জাতীয়তাবাদী দলের। তারা এ স্বৈরাচার খুনি হাসিনা থেকে মুক্ত হতে চেয়েছিলো। তারা মুক্ত হয়েছে।
মিনু আহ্বান করেন জিয়াউর রহমান যেভাবে দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলেছিলেন। তেমনি বাংলাদেশ আবার গড়তে হলে আগামী সাতদিনের মধ্যে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার সুযোগ্য ছেলে তারেক রহমানকে দেশে নিয়ে আসার সব ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে দ্রুত সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা দেওয়ার দাবি করেন তিনি। তিনি এ সময় দাবি আদায়ে ১০ নভেম্বর বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
রাজশাহী জেলা ও মহানগরের আয়োজনে কর্মসূচিতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ। মুক্তিযোদ্ধা দল রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খোকার সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান, রাজপাড়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি শওকত আলী, মতিহার থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আনসার আলী, শাহ এষদুম থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ, বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন দিলদার, রাজপাড়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, মতিহার থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক ডিকেন, শাহ মখদুম থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন।
এছাড়া জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, দলীয় সমাবেশ ও পথযাত্রাসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে বিএনপি এবং তার অঙ্গ সংগঠন এ দিবসটি পালন করছে।
পৃথক কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ইশা, সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ প্রমুখ।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল থেকেই নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে মাইকযোগে শহীদ জিয়াউর রহমানের ভাসন প্রচার করা হয়।