বাড়ির ছাদ সুন্দর করতে অনেকেই ছাদ বাগান করতে চান। বগুড়ার শহরের অধিকাংশ বাড়ির ছাদের দিকে তাকালেই ছাদ বাগান দেখা যায়। শহরের ছাদে যেসব বাগান দেখা যায় পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে বাড়ির ছাদে যেকোনো গাছ, এমনকি শাকসবজিও ফলানো সম্ভব। বাড়ির ছাদে বাগান করে সুফল পেতে শুরু করেছে বগুড়ার গৃহবাসীরা। ফুল, ফল গাছ থেকে শুরু করে সবজির বাগান গড়ে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে তারা। সচেতন মানুষদের মধ্যে ছাদ বাগান ও ছাদ কৃষি নতুন কিছু নয়।
কোন গাছের জন্য কী ধরনের মাটি উপযোগী তা নিশ্চিত হয়ে ছাদে বাগান করলে ভালো হয়। এ ছাড়া বেশি রোদ বা গরম সহ্য করতে পারে এমন গাছই ছাদে রোপণ করা উত্তম। ছাদে বাগান করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে নিয়মিত পানি সেচ দেওয়া। কারণ, বাগানের গাছগুলো যেহেতু সাধারণ মাটির সংস্পর্শ হতে দূরে থাকে তাই নিয়মিত পানি সেচ না দিলে গাছগুলো যেকোন সময় মারা যেতে পারে। সাধারণত দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে গাছ ভালো জন্মে। ছাদে বাগান করতে হলে এ ধরনের মাটি ব্যবহার করলে ভালো হয়। বাড়ির ছাদে খুব নরম প্রকৃতির গাছ লাগাবেন না। ছাদের প্রখর রোদ নরম প্রকৃতির গাছ সহ্য করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে বড় গাছের বনসাই লাগানো ভালো।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বগুড়ার শত শত বাড়িতে এখন ছাদ বাগানে শুধু ফুল নয় রীতিমত আম, পেয়ারা, বরই, ডালিমসহ প্রায় সব ধরনের ফলের গাছ লাগানো হচ্ছে। এমনকি অনেক বাড়ির ছাদ বাগানে আরবি খেজুর ও দুর্লভ ফলেরও সমারোহ দেখা গেছে। সুখী ও সুন্দর জীবনের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছাদে গাছ লাগানো এক মহৎ প্রচেষ্টা। এটি সাদকা জারিয়ার ন্যায় সৎ কাজ। ছাদ বাগানে গাছ লাগালে এর ফল, ফুল, ছায়া, শোভা ইত্যাদির কথা বিবেচনা করলে এর মধ্যে একটা আনন্দের ছোঁয়া পাওয়া যায়। সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা এদেশের মাঠে প্রান্তরে যে ফলমূল শাক-সব্জী উৎপন্ন হয় তার সাথে দেশের সবার ভাগ্য জড়িত থাকে। বিষমুক্ত খাবার মানব মন ও দেহকে রোগ বালাইমুক্ত ও সুস্থ রাখে। এরই আলোকে ছাদ বাগানে উৎপাদিত বিষমুক্ত ফল-মূল খেয়ে ভালো থাকতে চাই। দেশের মানুষরা ছাদ বাগান হোক বা বাড়ির উঠানে সামান্য জমি হোক প্রত্যেককেরই উচিত বিষমুক্ত শাব-সব্জী, ফল-মূল ও খাদ্যশষ্য উৎপাদন করা। নিজেও বিষমুক্ত খাবার খাবো অপরকেও উদ্বুদ্ধ করবো। এটিই হোক দেশের মানুষের প্রত্যাশা। অপরদিকে ছাদ বাগানের জন্য সার, মাটি, কাটা ড্রাম, কাঠের তৈরি টবও তৈরি হচ্ছে বাণিজ্যিক ভাবে। ছাদ বাগানও হতে পারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির নতুন একটি উদ্যোগ।