ছয়পুকুরিয়া বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ এর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পরিচালনা পর্ষদের কতিপয় সদস্য কর্তৃক আনিত আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রোববার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন অধ্যক্ষ মোছা: আইনুন নাহার। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমি বিগত ০১/০৭/১৯৮৯ থেকে ২০/০৬/২০০৪ পর্যন্ত অত্র বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক, ২১/০৬/২০০৪ হতে ৩১/১০/২০০৮ পর্যন্ত ভান্ডারি বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক, ০১/১১/২০০৮ থেকে ১২/০৬/২০১৩ পর্যন্ত অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হিসেবে এবং ১৩/০৬/২০১৩ থেকে অদ্যবধি ছয়পুকুরিয়া বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত আছি। ৩৫ বছরের অধ্যাপনা জীবনের শেষপ্রান্তে এসে প্রতিষ্ঠানের কতিপয় স্বার্থান্বেষী সদস্য কর্তৃক আনীত উপরোক্ত অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ উপস্থাপন করছি। বিগত ৩১/১০/২০২৪ ইং তারিখে কমিটির সদস্য জনাব রাশেদুল হক রনির নেতৃত্বে ও কলেজ শাখার কতিপয় শিক্ষকের ইন্ধনে মোহনা টিভির প্রচারণার মাধ্যমে জানতে পারি যে, শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে মানসিক ভাবে আহত ও সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যাদি উপস্থাপন করে তা জনসাধারনের মধ্যে প্রচার করা হচ্ছে। সঠিকতা যাচাই না করে ভুল তথ্য সংম্বলিত উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। উল্লেখ্য যে পারফরমেন্স বেজড গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশন (চইএঝও) স্কিম এর আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বাংলাদেশ, ঢাকা কর্তৃক ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা অনুদান নিয়ে ষড়যন্ত্র মূলক অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু উক্ত অর্থ যথাযথ ও সুষ্ঠুভাবে বিধিমোতাবেক ব্যয় করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিল নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তি দ্বারা পরিশোধ করা আছে। প্রতিষ্ঠানের সকল খাতের আয়কৃত অর্থ ব্যাংকের একাউন্টে যথাসময়ে জমা করা হয়। সভাপতি ও অধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষর ছাড়া কোন অর্থ উত্তোলন ও খরচ করা হয় না। এ ক্ষেত্রে ভুয়া ভাউচারের অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। ২০২১ ইং সালের এসএসসি পরীক্ষার বোর্ড কর্তৃক ফেরত অংশ কলেজের ব্যাংক একাউন্টে জমা করা আছে। ভীষনভাবে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি যে, ২০২১ সালের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষার বোর্ড কর্তৃক উক্ত টাকা ফেরতের চিঠি কোনভাবেই আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। এ বিষয়ে কোন শিক্ষক বা ছাত্রীদ্বারা বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। চাহিবা মাত্রই ব্যাংক থেকে উত্তোলন পূর্বক ৪১,২২০/- (একচল্লিশ হাজার দুইশত বিশ ) টাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে বন্টন করা হবে। বর্তমান পরিচালনা কমিটি গঠনের তারিখ ২২/০২/২০২৪ ইং এবং মার্চ,২০২৪ ইং হতে তাদের কার্যক্রম শুরু হয়। বিগত কমিটি যথাযথ ভাবে তাদের সময়কালীন হিসাবাদি পর্যবেক্ষন অন্তে সম্পন্ন করেছেন। বর্তমান কমিটি কোনভাবেই পূর্ববর্তী কমিটির হিসাবাদি বিশেষ অনুমতি ছাড়া পর্যবেক্ষন করার অধিকার রাখে না। এবিষয়ে তারা বিধিলঙ্ঘন পূর্বক অভিযোগ দায়ের করেছেন। ২০২০ সালে করোনা কালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের বেতন আংশিক আদায় হয় এবং শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে আংশিক বেতন পরিশোধ করা হয়। ফান্ডের অপর্যাপ্ততার কারণে ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত সকল শিক্ষক/কর্মচারীদের ১২ (বার) মাসের বেতন বকেয়া আছে। প্রতিষ্ঠানিক কাজের নিমিত্তে বিভিন্ন কমিটি থাকলেও সভাপতি মহোদয় তার আত্মতৃপ্তির জন্য অন্যদের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়মূলক কাজ নিজ উদ্যোগে করে থাকেন। প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘদিন ধরে এই ধারাটি চলমান। অভিযোগকারী অজ্ঞাত কারণে উক্ত নির্মাণ কমিটিতে নিজেকে বহাল রাখার নিমিত্তে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নানান অভিযোগ আনয়ন করেন। রাশেদুল হক রনি’র নেতৃত্বে বিগত ২৪/০৩/২০২৪ ইং তারিখে কলেজের কাজের কথা বলে ১,১২,০০০/- (এক লক্ষ বারো হাজার) টাকা কলেজ ফান্ড হতে গ্রহণ করেন যার আজ পর্যন্ত কোন ভাউচার জমা করেননি। যা রীতিমত সংশয়যোগ্য ও প্রশ্নবিদ্ধ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দিয়ে আন্দোলনে নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের জন্য দোয়ার ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন খোলা জায়গায় ও দেয়ালে গ্রাফিতি অংকনে শিক্ষকরা তাদেরকে পূর্ণ সহযোগিতা করেন। উল্লিখিত রাশেদুল হক রনি প্রতিষ্ঠানের নয়মনীতি উপেক্ষা করে যখন তখন কলেজে এবং অফিসে প্রবেশ করে কলেজ কার্যক্রমের বিঘ্ন ঘটান। প্রতিষ্ঠানের কলেজ শিক্ষক ও স্কুল শিক্ষক এর মধ্যে ভুলভাল বুঝিয়ে দলাদলি সৃষ্টিসহ বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেন। কলেজের অপর্যাপ্ত ফান্ড থেকে শিক্ষকদের মধ্যে টাকা বন্টনের বিষয়ে কলেজ শাখার শিক্ষক- পি এন এম জীবন নেসা, মো: মিজানুর রহমান, মো: সাইফুল ইসলাম ও মো: জিল্লুর রহমান কর্তৃক আনীত মামলার হুমকি প্রদর্শন সম্বলিত উকিল নোটিশটি সভাপতি ও অধ্যক্ষকে প্রদান করেছেন। যা উক্ত সদস্য রাশেদুল হক রনির প্ররোচনাতেই আনা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এহেন অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের অপ্রত্যাশিত, নিন্দনীয়, পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সরকারি সেকায়েফ কর্তৃক পুরস্কার প্রাপ্ত ও ঐতিহ্যবাহী এই নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখার জোরদাবি রেখে আমাকে মিথ্যা ও অসত্য অভিযোগের দায়মুক্তি প্রদানে আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।”