মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শনিবার (২ নভেম্বর) নানান কর্মসূচি পালন করা হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘সমবায়ে গড়ব দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’। দিবসটি উপলক্ষে সকালে গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। এর আগে গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। এটি নগরীর লক্ষীপুর মোড়সহ বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ কওে পূণরায় ল্যাবরেটরি স্কুলে গিয়ে শেষ হয়। সমবায় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. হুমায়ূন কবীর বলেন, ১৯০৪ সালে বৃটিশ ভারতে বৃটিশ সরকার সমবায় চালু করে। এখন প্রায় ২শ’টি দেশে সমবায় চালু আছে। কারণ সমবায় দারিদ্র্য বিমোচন এবং আত্মসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের প্রধান উপায় হচ্ছে- অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হচ্ছে সমবায়। কৃষি, মৎস্য, দুগ্ধ, পরিবহন, গৃহায়ণ, শিল্প, বিমা এবং বাজারজাতকরণ-সহ অর্থনীতির সবক্ষেত্রে সমবায় কার্যক্রম পদ্ধতির গুরুত্ব অপরিসীম।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ২০২৪ সালে সমবায় দিবস উপলক্ষে সরকার কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে সমবায়ীদের পেশাভিত্তিক নিবিড় প্রশিক্ষণ, সহজে সমবায়ীদের ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা, প্রযুক্তিগত সুবিধা ও সমবায়ীদের কর্মদক্ষতা বাড়ানো ।
ভোক্তা-উৎপাদকের বিড়ম্বনা প্রসঙ্গে ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের দেশে খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই, সমস্যা হচ্ছে দুষ্টু মজুতদারি ও মধ্যস্বতভাগী। মূলত তাদের কারণেই একদিকে যেমন কৃষকরা নায্যমূল্য পাচ্ছেন না, অন্যদিকে তেমনি ভোক্তারাও নায্যমূল্য পাচ্ছেন না। তাই পৃথিবীতে এ সমস্যার একটাই সমাধান, তা হলো সমবায় মার্কেটিং।
এ সময় সবাইকে ভবিষ্যতে নিরাপদ ও বৈষম্যহীন জীবনযাপনের জন্য সমবায়ে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান বিভাগীয় কমিশনার।
রাজশাহী বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্মনিবন্ধক মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সারোয়ার জাহান, আরএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার অনির্বান চাকমা, রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার।
আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি ২০২৩ সালে রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ সমবায়ীর হাতে ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন।