পোষাক শিল্পের অস্থিরতা পতিত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী মালিকদের পরিকল্পিত চক্রান্ত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে গত কয়েকদিনের আশুলিয়ায় গার্মেন্টসে অস্থিরতা সৃষ্টির প্রসঙ্গ টেনে তিনি এই অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, ‘‘আমরা তো আলামত দেখেছি, গতকাল একটা গন্ডোগোল হয়েছে গার্মেন্টসে, ঘটনা হচ্ছে যে, যারা গার্মেন্টসের মালিক যারা শেখ হাসিনার অত্যন্ত সুবিধাভোগী তাদের গার্মেন্টসের লোকরা এসে অন্যান্য যেসব গার্মেন্টস আছে যারা নিরপেক্ষ অথবা বিএনপির সমর্থিত লোকজনের গার্মেন্টসে এসে তারা হামলা করেছে। এটা তো আমরা তথ্য নিয়ে আপনাদের বলছি।” ‘‘কে নজরুল ইসলাম? কে সালাম মোর্শেদী? এরা আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী নয়, এরা আওয়ামী লীগের এমপি ছিলো না… এদের গার্মেন্টস থেকে এসে একটা কৃত্রিমভাবে পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরি করছে। য়াতে ছাত্র-জনতার এই বিপ্লব এটা যেন ব্যর্থ হয়ে যায়, এটা যেন টিকে থাকতে না পারে…এই ধরণের ষড়যন্ত্র ওরা করছে।” রিজভী বলেন, ‘‘ এটা শুধু গার্মেন্টসে নয়, যেমন পাবর্ত্য চট্টগ্রামে হলো একটা তুচ্ছ ঘটনাকে নিয়ে একটা বড় ঘটনা হলো।‘‘ প্রকৃত স্বৈরাচারের দুষ্ট চক্র প্রশাসক থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি জায়গায় তারা সুতার টান দিচ্ছে এবং একটার পর একটা ঘটনা তারা এখানে ঘটাচ্ছে।” ‘ইউপি এখনো বাতিল করছে না কেনো”
রিজভী বলেন, ‘‘ কি ভয়ংকর নিপীড়নের একেকটা কেন্দ্র বাংলাদেশে জনপদের পর জনপদ তারা(বিগত সরকার) তৈরিতে করেছে। এজন্য আমরা বার বার বলেছি এই জনপদ কারা তৈরি করেছিলো… আওয়ামী লীগের এমপি, আওয়ামী লীগের উপজেলা চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-পৌর সভার চেয়ারম্যান। এই অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সবাই সমর্থন করেছে… এটা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ফসল এই সরকার হয়েছে।”
‘‘ তাহলে যারা এই ধরনের নিপীড়নের একেকটা কেন্দ্র তৈরি করেছিলো, হিংস্র কুকুর দিয়ে যারা কামড় দেয়াতো তাদের অংশ তো এখনো রয়ে গেছে। আপনি(অন্তবর্তীকালীন সরকার) ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি পরিষদ বাতিল করছেন না কেনো? এরা তো সেই আওয়ামী লীগের গুন্ডা-পান্ডা-সন্ত্রাসী তারা কত হিংস্র-বর্বরোচিত ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি উপদেষ্টা পরিষদকে বলতে চাই, আপনাদের ভয় কিসের? কে আপনারকে নিষেধ করছে, কারা আপনাদেরকে নিষেধ করছে যে, এটা করা যাবে না। এটা(ইউপি) রাখাকে তো হাসিনার দ্বারা যারা যারা নিপীড়িত, হাসিনার দ্বারা যারা শহীদ হয়েছেন তাদের রক্তের প্রতি অবমাননা করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, ‘‘ প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় এমনভাবে ঘাপটি মেরে আছে শেখ হাসিনার অনুচরেরা…শুধু অপেক্ষা করছে যে… শেখ হাসিনা বলেছে না, আমি কাছাকাছি আছি। এই কাছাকাছি বলাতে তারা এখন ঘাপটি মেরে থেকে নানাভাবে অন্তবর্তীকালীন সরকার, তার প্রশাসনকে ও গণতান্ত্রিক শক্তির কাজ-কর্ম ব্যাহত করার জন্য তারা এভাবে গোপনে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে।”
‘‘ আমরা ১৬/১৭ বছর লড়াই করেছি। কোনো চক্রান্তকারীরা চক্রান্ত করে,তাদের প্রভুদের কাছ থেকে মদদ নিয়েও আর কিছু করতে পারবে না। জনগনের শক্তি সর্বোচ্চ শক্তি… এটা ভুলে গিয়েছিলো শেখ হাসিনা… এই কারণে জনগন ভোট নেয়ার চাইতে তিনি নির্বাচন-ভোটের প্রতিষ্ঠানকে ধবংস করে দিয়ে ছাত্র লীগ-যুব লীগকে দিয়ে র্যাব-পুলিশকে শক্তি করেছিলো। তার ভোটের দরকার ছিলো না। সে বলেছিলো আমরা ভোটের দরকার নাই, তুই কত গুলি করতে পারিস বিএনপির নেতা-কর্মীকে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীকে এরওপর তোর প্রমোশন হবে…এর বিনিময় তোরা যত লুট করতে পারিস লুট করবি.. কেউ বাধা দেবে না।”
‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য শেখ রবিউল ইসলাম রবি প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শেখ রবিউল ইসলাম রবির আর্থিক সহযোগিতায় ছাত্র-জনতা বিপ্লবের সময়ে ঢাকা-১০ আসনের আহত রিকশা চালক সাইদুল ইসলামকে একটি ব্যাটারি চালিত নতুন অটোরিকশার চাবি ও কাগজপত্র তুলে দেন রিজভী।