1. nobinbogra@gmail.com : Md. Nobirul Islam (Nobin) : Md. Nobirul Islam (Nobin)
  2. bd.momin95@gmail.com : sojibmomin :
  3. bd.momin00@gmail.com : Abdullah Momin : Abdullah Momin
  4. bd.momin@gmail.com : Uttarkon2 : Uttar kon
৩৮টি গুলি শরীরে নিয়ে যন্ত্রনায় কাতর সিরাজগঞ্জের মেধাবী ছাত্র আলমগীর - Uttarkon
শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হলো রাসিকের সাবেক মেয়র লিটনের বাড়ি যমুনা সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম রেল স্টেশনের নাম পরিবর্তন এ বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচন : ড. ইউনূস আ’লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকার শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে : উপদেষ্টা আসিফ আ. লীগ নেতাদের সম্পত্তিতে হামলা না চালানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রে ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ যোগ দিলেন মির্জা ফখরুল, আমির খসরু ও জাইমা রহমান পলাতক শেখ হাসিনা উসকানি দিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত করেছে : ডা. শফিকুর রহমান ছয় মাসেও স্বৈরাচারের দোসরদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়নি সরকার : রিজভী গাইবান্ধা আ.লীগ কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিল ছাত্র-জনতা

৩৮টি গুলি শরীরে নিয়ে যন্ত্রনায় কাতর সিরাজগঞ্জের মেধাবী ছাত্র আলমগীর

  • সম্পাদনার সময় : শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৫৩ বার প্রদশিত হয়েছে

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : দেশব্যাপী কোটা সংস্কারে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লে এতে অংশ নেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ঝাউপাড়া গ্রামের আলমগীর হোসেন (২৪)। মিটিং, মিছিল, স্লোগানে অগ্রভাগে ছিলেন তিনি। আন্দোলন সরকার পতনের দিকে ধাবিত হলে তিনি আরও ওতোপ্রতোভাবে এটিতে জড়িয়ে পড়েন। গত ৪ আগস্ট কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের গুলির শিকার হন। এখন শরীরে ৩৮টি গুলি নিয়ে যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়েছেন সাহিত্যিক বরকতুল্লাহ ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের এ ছাত্র। আলমগীরের বাড়ি গিয়ে তাকে বিছানায় শায়িত অবস্থায় দেখা যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে বুলেটের যন্ত্রণায় ছটফট করছেন তিনি। পাশে বসা তার মা রেবা খাতুন। ব্যথায় ছেলে ককিয়ে উঠলে গুমরে কেঁদে ওঠেন তিনি। আলমগীরের মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিন্তু প্রচন্ড ব্যথায় কাতর আলমগীরের চোখে ঘুম নেই। সিরাজগঞ্জের খুকনী ঝাউপাড়া এলাকায় আলমগীর হোসেন তার বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করেন। ছেলের ব্যাপারে রেবার কাছে জানতে চায় এই প্রতিবেদক। তিনি বলেন, এনায়েতপুর মিটিংয়ে যাইয়্যা আমার ছওয়ালের গুলি লাইগা অজ্ঞান অইয়্যা পইড়্যা আচিল। মানুষে ধইরা হাসপাতালে নেয়, কয়ডা গুলি বাইর কইরচে আর বাইর কইরবার পারে নাই। ছওয়ালের চিকিৎসা কইরব্যার পারি না একটা পথ্য খাওয়াইতে পারি না। সারা রাইত গুলির যন্ত্রণায় ছেলেও ছটফট করে, সারা রাইত কান্দে। ছেলেও কান্দে আমিও কান্দি, ঘুমাইতে পারি না। কেউ আমার ছওয়ালক সহযোগিতা করে নাই। ট্যাহার জন্য আমার ছওয়ালক চিকিৎসা করতে পাইরলাম না।শাহজাদপুর উপজেলার ঘোড়াশাল সাহিত্যিক বরকতুল্লাহ ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আলমগীর হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ছিলেন ফ্রন্ট লাইনে। আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে গত ৪ আগস্ট এনায়েতপুর থানার সামনে অবস্থান করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিল বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা। এ অবস্থায় পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। ছররা বুলেট বিদ্ধ হয় আলমগীরের শরীরের বিভিন্ন অংশে। সেখানেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ছাত্র-জনতা তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার শরীরে ৫৬টি গুলি লেগেছিল।

আলমগীরের বাবার নাম আবু হাসান বিশা। তিনি এনায়েতপুরে একটি কাপড়ের আড়তে সামান্য বেতনে চাকরি যমুনার ভাঙনে হারিয়েছেন পৈত্রিক বাড়ি-ঘর, জমি-জমা। আরেকটি ছেলে আছে তার। তিনি বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা সংসার করেন। আবু হাসান থাকেন আলমগীরকে নিয়ে। ছেলে অসুস্থ, কিন্তু অর্থাভাবে চিকিৎসা না করাতে পারায় তার চোখে রাজ্যের হতাশা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এ ফ্রন্ট লাইনারের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। আলমগীর বলেন, আমি প্রথম থেকেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলাম। ঢাকাতেও আমি আন্দোলনে অংশ নিই। সর্বশেষ ৪ আগস্ট এনায়েতপুর থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিই। আমরা মিছিল নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে এনায়েতপুর থানার সামানে অবস্থান করছিলাম। পুলিশ আচমকা গুলি চালালে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। রাতে দেখি আমি এনায়েতপুর হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তার বলেছিলেন আমার শরীরে ৫৮টি ছররা গুলি লেগেছিল; ১৮টি বরে করতে পেরেছেন তারা। এখনও ৩৮টি গুলি রয়ে গেছে। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করিয়ে সেগুলো বের করতে পারছি না। তিনি বলেন, প্রতিদিন রাতে যন্ত্রণায় ভুগছি। আমার সবচেয়ে বড় দুঃখ, কেউ আমার খোঁজ নেয় না। পত্র-পত্রিকায় দেখি রাজনৈতিক দলের নেতা, সমন্বয়করা, বিভিন্ন সংগঠন অনেককেই সাহায্য করছে। আমি পাচ্ছি না। এ জন্য কান্না পায়। কিন্তু কাঁদি প্রচণ্ড ব্যথায়। আমার মতো কারও শরীরে যেন গুলি বহন করতে না হয়। সরকারের কাছে আমার দাবি, আমরা যারা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আছি, তাদের দিকে যেন দৃষ্টি দেওয়া হয়।আলমগীরের বাবা আবু হাসান বিশা বলেন, টাকার অভাবে ছওয়ালর চিকিৎসা করতে পারছি না। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ও ব্যথায় চিৎকার করে। এখন পর্যন্ত আমার ছওয়ালক কেউ দেখতে আসে নাই। কেউ সহযোগিতা করে নাই।আলমগীরের প্রতিবেশী ও আত্মীয় গোলজার মোল্লা বলেন, আলমগীর অত্যন্ত ভালো ছেলে। ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে আহত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কেউ তার খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি। দেশ স্বাধীন হয়েছে বৈষম্য থেকে। কিন্তু সেটি এখনও রয়ে গেছে। আলমগীরের চিকিৎসায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, আলমগীর আন্দোলন করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, এটি আমি জানি। তবে সিরাজগঞ্জে হয়েছে কিনা জানি। ঢাকাতেও সে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। আমরা জেলার পক্ষ থেকে তাকে সহযোগিতা করতে পারিনি। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সহযোগিতা করেছে কিনা তাও আমার জানা নেই। এটা স্থানীয় নেতাদের দায়িত্ব। যদি তাকে সহযোগিতা করে না থাকে, তার জন্য সেটির ব্যবস্থা করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরও খবর
Copyright &copy 2022 The Daily Uttar Kon. All Rights Reserved.
Powered By Konvex Technologies